মানুষ সঠিক কাজটি দেখতে চায়
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে বলেছেন এমন হত্যাকাণ্ড অন্য দেশেও খুব ঘটে। কথাটি চরম বেদনাদায়ক। এ জাতীয় বক্তব্য সম্ভাব্য অপরাধীদের উৎসাহিত করে এবং সমাজে অপরাধ বাড়ায়। আমাদের দেশে সমস্যা হল উঁচু আসনে যারা বসেন তারা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন নন। হতে পারেন তারা খুবই যোগ্য ও দক্ষ, কিন্তু তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতার প্রমাণ তারা তাদের কাজের মাধ্যমে দিতে পারেন না। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা দায়িত্ব পালন না করে দায়িত্ব জ্ঞানহীন কথা বলেন।
কোন মারাÍক অপরাধমূলক ঘটনা যখন দেশে ঘটে তখন জনগণ এ কথা শুনে সান্ত্বনা পেতে চায় না যে অন্য দেশেও এমনটা ঘটেছিল। খুন-খারাবি অন্য দেশে যে ঘটে না, তা কেও বলে না। কিন্তু অন্য দেশে প্রত্যেকটি খুনে ও ফৌজদারী অপরাধে নিরপেক্ষ তদন্ত হয় এবং অপরাধী শাস্তি পায়। কোন মারাÍক ফৌজদারী অপরাধ সম্পর্কে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের থেকেই মানুষ জানতে চায়। মন্ত্রীদের থেকে রাজনৈতিক বক্তব্য শুনতে চায় না। ক্ষেত্রবিশেষে রাজনৈতিক বক্তব্যে মানুষের বিরক্তি ঘটায় ।
দীপন হত্যা ও অন্যান্যদের ওপর যে আক্রমণ হয়েছে এবং তারা জখম হয়ে কোন রকমে প্রাণে বেঁচে গেছেন, তা দলমত নির্বিশেষে মানুষের মধ্যে মারাÍক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সেই মুহূর্তে শীর্ষ ব্যক্তিদের থেকে মানুষ এমন কিছু শুনতে চায় যাতে তাদের কষ্ট কিছুটা দূর হয়। প্রশাসনের প্রতি তাদের আস্থা জšে§। সেই কাজটি না করে অনুমানে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা খুবই অনৈতিক কাজ।
মানুষ চায় সত্যিকারের অপরাধী আইনের আওতায় আসুক। তার সর্বোচ্চ শাস্তি হোক।
যার-তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা রাষ্ট্রের কাজ নয়। মানুষ অন্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশকে তুলনা করে সান্ত্বনা পাবে না। আমাদের দেশে আইনশৃঙ্খলার অবস্থা কি এবং এখানে ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন আছে কিনা সেটাই জনগণের বিবেচনার বিষয়। অর্থহীন কথা মানুষকে শোনানো আÍপ্রতারণা মাত্র। মানুষ সঠিক কাজটি দেখতে চায় কোন কথা শুনতে চায় না।
লেখক : গবেষক ও কলামিস্ট