বিনোদনসব সংবাদ

জীবনসঙ্গী সম্পর্কে বলিউডের ৫ তারকা…

bতারকাদের জীবন-যাপন সাধারণ মানুষের চেয়ে একটু অন্য রকমই হয়ে থাকে। বিলাসবহুল জীবনে তাদের রয়েছে আনন্দ,নাচ-গান আর পার্টি। তবে তাদের কিছু বিষয় রয়েছে যার কারণে তারা প্রায়ই সমালোচিত হন। তার মধ্যে একটি তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ এবং বিচ্ছেদ। আর তা যদি হয় অন্য কোনো তারকার সঙ্গে তাহলে তা আরো খারাপ আকার ধারণ করে।

 

কিন্তু বলিউডের এমন কিছু তারকা রয়েছেন যারা বিয়ে করেছেন এ ইন্ডাস্ট্রির তার সহ-অভিনয় শিল্পীকে। এবং তাদের দাম্পত্য জীবন নিয়েও তারা বেশ খুশি। মাঝে মাঝে সংবাদমাধ্যমে নিজেদের প্রশংসায় পঞ্চমুখও হয়েছেন এ তারকারা। বলিউডের এমন পাঁচ দম্পতির কথা শুনব আজ।

 

a
জয়া খুবই স্বতস্ফূর্ত মানুষ
স্ত্রী জয়া বচ্চন সম্পর্কে নিজের ভাবনা জানাতে গিয়ে অমিতাভ বচ্চন জানান যে, জয়া খুবই স্বতস্ফূর্ত মানুষ এবং একেবারেই তার মতো নন। জয়ার মতো একজন মানুষকে জীবনে পেয়ে নিজেকে অনেক বেশি ভাগ্যবান মনে করেন অমিতাভ। কারণ তিনি মনে করেন সিনেমার দুনিয়াটা সে ভালো বুঝবে সে, কারণ জয়া এখানটার পরিবেশ সম্পর্কে জানে। আর সিনেমার জগতের মানুষ হওয়ায় অমিতাভের অবস্থাগুলো বোঝা জয়ার জন্যে খুবই সহজ হয়েছে।

অমিতাভ জানান, সিনেমার জগতের বাইরে কাউকে বিয়ে করার কথা চিন্তাও করতেন না তিনি। যদিও তিনি মানেন যে এই জগতের দুজন মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই একসঙ্গে বেশিদিন থাকতে পারেনা। কিন্তু সেটা সবসময়ই সত্যি নয়। বিগ বি খ্যাত এ অভিনেতা বলেন, জীবনে উত্থান-পতন থাকবেই। এটা জীনেরই একটা অংশ। তবে এটাই সবটা নয়। জয়াকে সোজা কথার মানুষ, স্পষ্টবাদী এবং অনেক সময় কট্টরভাবে স্পষ্টবাদী বলে মনে করেন অমিতাভ বচ্চন। তবে সেটাকে জয়ার নিজস্ব গুন আর বৈশিষ্ট্য বলে মনে করেন তিনি।

এ অভিনেতার মতে, তিনি কখনো জয়ার স্বভাবকে পরিবর্তন করতে চাননি। তেমনি চাননি জয়াও। এই যেমন- অমিতাভের একা থাকতে চাওয়ার সময়গুলোকে বাঁধা দেননি জয়া। এখন অনেক সামর্থ্য থাকবার পরেও দামী উপহার চাননা জয়া। সর্বোপরি, নিজের জন্যে একজন ঐতিহ্যের ধারক আর বর্তমান দুনিয়ার উপযোগী কাউকে চাইছিলেন অমিতাভ। যেটা কিনা প্রথম দেখাতেই জয়া বচ্চনের ভেতরে পেয়েছিলেন তিনি।

b

সে সত্যিকারের পদ্মশ্রী এবং আমি তার পদ্মশ্রীমতী
এমনভাবেই অভিষেক বচ্চন সম্পর্কে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। প্রথম দিনগুলোর কথা মনে করে ঐশ্বরিয়া জানান, প্রথম দেখাতে অভিষেকের উচ্চারণজনিত কারণে কথা বুঝতেই পারেননি তিনি। পরবর্তীতে প্রপোজ করার সময়কার কথা বলতে গিয়ে ঐশ্বরিয়া জানান যে, গুরু সিনেমার সেটে থাকা নকল একটি আংটি দিয়ে তাকে প্রপোজ করেছিলেন আভিষেক। সত্যিকারের কোনো হীরের আংটি ছিল না সেটা। সেসময় একটা জিনিস মনে হয়েছিল ঐশ্বরিয়ার। আর সেটা হচ্ছে- ‘সে আসল এবং বাস্তব, আমাদের সম্পর্কের মতো। আমাদের জীবনে কোনো বিরক্তি কিংবা একঘেয়েমী নেই। আমরা একে অন্যের পরিচর্যা করি। প্রকাশের ব্যাপারটা অনেক বেশি সতস্ফুর্ত আর অর্থপূর্ণ। ভগবান আমাদের প্রতি সদয় হয়েছেন। আমরা ইচ্ছে করলেই ঐ মূল্যবান পাথরগুলো পেতে পারি। কিন্তু সত্যিই কি ওগুলোর প্রয়োজন আছে আমাদের?’

অভিষেক বচ্চনের স্ত্রী ও বচ্চন পরিবারের বধূ হওয়া নিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে অ্যাশ বলেন, ‘ অভিষেক যখন আমাকে প্রপোজ করেছিল তখন আমরা কেবই প্রেমিক-প্রেমিকা ছিলাম। কিন্তু বিয়ে করার পর আপনি কেবল কারো বউ হিসেবেই থাকতে পারবেন না। তাইনা? আমি খুবই খুশি যে অভিষেক আমাকে এক চমত্কার পরিবার দিয়েছে। অভিষেকের ক্ষেত্রে, আমি যা চেয়েছিলাম সে সেটি কোনো কোনো ক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশি!’

এমনিতে বোঝা না গেলেও অভিষেক আর নিজের ভেতরে অনেক মিল আছে বলে জানান ঐশ্বরিয়া। তিনি বলেন, ‘অভিষেক আমার অনুপ্রেরণা। সে খুব বন্ধুত্বপরায়ণ। যখনই আমি কোনো বিষয় নিয়ে সমস্যায় পড়ি তখন তার শরণাপন্ন হই আর চট করে আমার সমস্যার সমাধান করে দেয় সে। সে সত্যিকারের পদ্মশ্রী এবং আমি তার পদ্মশ্রীমতী।’

অন্যদিকে বিশ্বসুন্দরী স্ত্রীকে নিয়ে অনিরাপত্তায় ভোগেন কিনা জানতে চাইলে অভিষেক জানান ‘ঐশ্বরিয়া আমাকে টাকা বা বচ্চন খেতাবের জন্যে বিয়ে করেনি। আমিও তাকে তার সৌন্দর্যের জন্যে বিয়ে করিনি। সে আমার সবচাইতে কাছের বন্ধু। আর তাই এই প্রশ্ন আসতেই পারেনা!’

c
সে আড়ালে থাকে ও সাধারণ জীবন যাপন করতে পছন্দ করে
কিছুদিন হলো রানী মুখার্জি আর আদিত্য চোপড়া সবাইকে জানিয়ে নিজেদের গাটছড়া বেঁধেছেন। তবে বাস্তবে পরিচালক আর প্রযোজক হলেও দাম্পত্য জীবনে স্বামীর পরিচালনায় চলাটাকে একেবারেই মানতে নারাজ এই অভিনেত্রী। ‘আমি তাকে বলেছি আমাকে পরিচালনা না করতে। এমনিতেও মনে হয়না আমি তাকে পরিচালক হিসেবে মানতে পারব। একটি চলচিত্রের ক্ষেত্রে পরিচালক জাহাজের ক্যাপ্টেন আর অভিনেত্রীকে তাই তার কাছ থেকে কথাও শুনতে হতে পারে। এর চাইতে আমার মনে হয় স্ত্রীর ভূমিকাটাই আমি বেশি পছন্দ করব। তাহলে, আমি তাকে কি করতে হবে সেটি বলতে পারব। এমন সহানুভূতিশীল, দয়ালু এবং ভালো মানুষকে খুঁজে পেয়ে আমি সত্যিই খুশি। আমি তাকে শ্রদ্ধা করি।’, বলেন রানী।

শুধু তাই নয়, বিয়ের আগের যেমন জীবন যাপন করতেই তেমনটা থাকতেই পছন্দ করেন এ অভিনেত্রী। বিয়ে কারো জীবন বদলে দিতে পারেনা বলে মনে করেন তিনি। আদিত্য চোপড়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সে আড়ালে থাকে আর সাধারণ জীবন যাপন করতে পছন্দ করে।’

d

আমি সাইফের চাইতে আরো বেশি অধিকার ফলাতে চাইতে পারতাম
নিজেদের সম্পর্ক, বিয়ে বা কোনোকিছু নিয়ে কখনোই খুব বেশি মুখ খুলতে আগ্রহী দেখা যায়নি সাইফ আলি খান আর কারিনা কাপুর জুটিকে। নিজেদের এমন ছুপা রুস্তম ভাব নিয়ে কারিনা জানান, বহুদিনের অভিজ্ঞতায় একটা ব্যাপার বুঝতে পেরেছেন তারা। সেটি হলো দর্শকদের আগ্রহ শুধু তারা কি খেয়েছেন, কি পরছেন, কাকে দাওয়াত দিচ্ছেন- এগুলো নিয়েই। বাকী কিছুর মুল্যই তাদের কাছে নেই। আর তাই নিজেদের সম্পর্কের একান্ত অংশটাকে সবার চোখের আড়ালেই রাখতে চান তারা।

নিজেদের বিয়ে নিয়ে কারিনা জানান, ‘বিয়ের রেজিস্ট্রেশন শেষে আমরা ছাদে গিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি।’ আর এতটুকুই যথেষ্ঠ বলে মনে করেন এ অভিনেত্রী। সাইফ সম্পর্কে বলতে গিয়ে কারিনা জানান, ‘আমার মনে হয় সাইফ আগের চেয়ে অনেক বেশি দায়িত্ববান হয়েছে। তার ভেতরে সম্পর্ক আর বন্ধন নিয়ে নতুন একটা অনুভূতি তৈরি হয়েছে। সে আমার সঙ্গে যুক্ত, সে এই প্রতিজ্ঞাকে অনুভব করে, জাবদিহিতার জায়গাটাকে বোঝে।’

একে অন্যের সঙ্গকে উপভোগ করেন জানিয়ে কারিনা বলেন, তার মনে হয় সাইফেরও একটা ভীতের প্রয়োজন। সাইফকে নিজের সবচাইতে ভালো বন্ধু বলে মনে করেন কারিনা। কেবল দায়িত্ব আর শারীরিক চাহিদাই নয়, মানসিকভাবেই একে অন্যের প্রতি নির্ভরশীল বলে মনে করেন তিনি। ‘আমার স্বামী আমার সবচাইতে ভালো বন্ধু।’, বলেন কারিনা। সাইফ কি কারিনার ওপরে অধিকার খাটানোর চেষ্টা করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কারিনা জানান, সাইফ তার দায়িত্ব বোঝে এবং সে খুবই উদার মনের। বরং নিজেকে নিয়ে কারিনা জানান,‘আমি সাইফের চাইতে আরো বেশি অধিকার ফলাতে চাইতে পারতাম।’

কারিনাকে নিয়ে বলতে গিয়ে নিজের হাতের ট্যাটু দেখান সাইফ। কারিনার নাম খোদাই করা সেখানে। তবে নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে তিনি জানান, সম্পর্ক থাকা মানে এইনা যে সবসময়ই একে অন্যের সঙ্গে থাকতে হবে। সবারই কিছুটা ছাড় দরকার হয় এবং তিনি সেটা দেন।

e
জেনেলিয়ার ভালোবাসা আমাদের আজীবন একসঙ্গে রাখবে
নিজের ব্যাক্তিগত জীবনকে সবসময়ই পর্দার আড়ালে রাখতে চেয়েছেন রিতেশ দেশমুখ। জেনেলিয়ার সঙ্গে বিয়ের আগেও পুরোটাই গোপন করে যান তিনি। স্ত্রী সম্পর্কে বলতে গিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান এই অভিনেতা। ‘আমি ঠিক জানিনা কি বলব। আমার মনে হয় আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি, জীবনকে শিখেছি, ভালোবেসেছি এবং কাজ করেছি। এটা আস্তে আস্তে হয়েছে। হঠাৎ করেই হয়নি। আমরা বন্ধু ছিলাম এবং এখন সেই বন্ধনটা আরো শক্ত হয়েছে। আমার শুধু মনে হয়েছে আমি যাকে চেয়েছি জেনেলিয়া সেইজন! আমি তাকে অনেক বেশি ভালোবাসি। এতটুকুই!’

নিজেদেরকে একে অন্যের ‘আইডল’ বলে মনে করেন এই দুই অভিনেতা-অভিনত্রী। তবে রিতেশকেও নিজের সবচাইতে ভালো বন্ধু বলে মনে করেন জেনেলিয়া। তার মতে রিতেশের ভেতরে কোনোরকম অহংকারবোধ নেই। একেবারে মাটির মানুষ রিতেশ। স্বামীকে নিয়ে গর্বিত বলেও জানান এই অভিনেত্রী।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.