মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় জামায়াতের সংগঠনে পরিণত হয়েছে
ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সংগঠনে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য।
বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র এবং সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ রুখে দাঁড়ান’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চ আয়োজিত সভায় পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ব্যক্তিগত সহকারী আজ মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব। আর এই সচিবের ব্যক্তিগত সহকারীও একজন জামায়াতের কর্মী। তবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক কোন পক্ষের তা আমার জানা নেই। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যদি এ অবস্থা হয় তাহলে অন্য মন্ত্রণালয়গুলোর কী অবস্থা?’
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের মদদদাতা বিএনপি ও জামায়াত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি ও জামায়াত জঙ্গিবাদকে মদদ দিচ্ছে। আর এক্ষেত্রে বিএনপি ও জামায়াতের প্রধান মিত্র হচ্ছে আমেরিকা। কারণ আমেরিকার সহযোগিতাতেই বিএনপি ও জামায়াত দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।’
সরকারের উদ্দেশে পঙ্কজ বলেন, ‘কোনো ঘটনার তদন্ত হওয়ার আগে রায় দেয়ার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসুন। আর এর ব্যত্যয় ঘটলে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিত বিরাজ করবে।’
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘আমেরিকা জিরো টলারেন্স নিয়ে বাংলাদেশে নেমেছে। আর এর অংশ হিসেবেই বিএনপি-জামায়াত নতুনভাবে দেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রও রয়েছে।’
সরকারকে পরার্মশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি বিএনপিকে আগে ধ্বংস করে পরে জামায়াতকে নির্মূল করতে চান তাহলে সবচেয়ে বড় ভুল করবেন। তাই আগে জামায়াতকে ধ্বংস করতে হবে। আর জামায়াতকে ধ্বংস করতে হলে আগে তাদের অর্থনৈতিক উৎসগুলো খুঁজে বের করতে হবে।’
তার বক্তব্যের সাথে সহমত পোষণ করে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শরীফ নূরুল আম্বিয়া বলেন, ‘জামায়াতের আয়ের প্রধান উৎসগুলো হলো কওমি, আলিয়া মাদ্রাসা ও ব্যাংক সেক্টর। কিন্তু এগুলো আমাদের পর্যবেক্ষণে নেই। আর এগুলো ছাড়াও জামায়াতের আয়ের অন্য উৎসগুলোও খুঁজে বের করতে হবে এবং সেগুলো বন্ধ করতে হবে।’
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে জামায়াত ইসলামীর ১২৫টি সংগঠন আছে। আর এই সংগঠনগুলোতে প্রায় পাঁচ লাখ কর্মী আছে। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর মোট আয় পাঁচ লাখ কোটি টাকা।
এর আগে সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দুই দফা দাবি তুলে ধরা হয়।
দাবিগুলো হলো, অবিলম্বে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের রায় কার্যকর এবং জামায়াত-শিবিরসহ সকল জঙ্গিবাদি সংগঠন নিষিদ্ধ ও তাদের সকল অর্থের উৎস রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বে আনতে হবে।
আলোচনা সভায় জাসদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান আলম সাজু, বাংলাদেশ সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর, শিক্ষক নেতা রণজিৎ কুমার সাহা, সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের সমন্বয় পরিষদের সদস্য নুর আহমেদ বকুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।