Leadআন্তর্জাতিকসংবাদ শিরোনাম

মুহাম্মদ (সা.) যুগের কোরআন মিললো বার্মিংহামে

Kuranঢাকা জার্নাল: পবিত্র কোরআন শরীফকে বলা হয় পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। এর গুরুত্ব প্রতিটি মুমিন-মুসলমানের কাছে জীবনের পদে পদে। আর তাই তো ১৩শ’ বছরের বেশি সময় আগের হাতেলেখা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পবিত্রগ্রন্থ কোরআন শরিফের কিছু অংশের খোঁজ পাওয়া নিয়ে খবরের গুরুত্বও কম নয়।

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক দাবি করছেন, তারা পৃথিবীর ‘সবচেয়ে প্রাচীন’ কোরআন শরীফের কিছু অংশের খোঁজ পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে করা রেডিওকার্বন পরীক্ষার পর দাবি করা হয়েছে, কোরানের পাণ্ডুলিপিটি কমপক্ষে ১ হাজার ৩শ’ ৭০ বছর আগে লেখা হয়। সে হিসেবে এটি মহানবী মুহাম্মদ (সা.) যুগের বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রায় এক শতক ধরে কোরআন শরীফের এই অংশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে অনাবিষ্কৃত অবস্থায় ছিল। গ্রন্থাগারের যে অংশে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বই রাখা ছিল সেখানেই অংশটি মেলে। কিন্তু যখনই একজন পিএইচডি গবেষক তার প্রয়োজনে গ্রন্থাগারের ওই অংশে দলিল খুঁজতে যান তখনই মূলত কোরানের ওই অংশগুলো তার নজরে আসে। পাণ্ডুলিপিটি হাতে পাওয়ার পর ওই গবেষক তার রেডিওকার্বন ডেটিং করান এবং ফলাফলে অবাক হন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সংগ্রহশালার প্রধান সুসান অরওয়েল এ বিষয়ে বলেন, আসলে গবেষকদের কোনো ধারণাই ছিল না যে প্রাপ্ত অংশটি এতো পুরনো হতে পারে। গোটা পৃথিবীব্যাপী এ অংশটি খোঁজা হচ্ছিল এবং এখনও হচ্ছে। কিন্তু অংশটি যে খোদ বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়েরই গ্রন্থাগারে ছিল তা কে অনুমান করেছিল!

দ্য ব্রিটিশ লাইব্রেরি বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ ঈসা ওয়ালি এই আবিষ্কারকে ‘রোমাঞ্চকর আবিষ্কার’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, এ আবিষ্কারে মুসলিমরা পুনরায় আনন্দিত হবেন। পুলকিত হবেন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওকার্বন ইউনিট এ পাণ্ডুলিপিটি পরীক্ষা করেছে। তাদের মতে, ভেড়া অথবা ছাগলের চামড়ায় লিখিত হয়েছে এই পাণ্ডুলিপি। এ পর্যন্ত যত প্রাচীন কোরআন শরীফ পাওয়া গেছে তার মধ্যে সবচেয়ে আগের এটিই।

এ নিয়ে বার্মিংহাম কেন্দ্রীয় মসজিদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আফজাল বলেন, পাণ্ডুলিপির অংশবিশেষ দেখে আমি আনন্দে-আবেগে কেঁদে ফেলি। আমি নিশ্চিত যে, এটি একনজর দেখতে পুরো যুক্তরাজ্য থেকে মানুষ বার্মিংহামে আসবে।

পরীক্ষায় আরও যে বিষয়টি উঠে এসেছে তা হলো, পাণ্ডুলিপিটি শতকরা ৯৫ ভাগ নিশ্চয়তার সহিত বলা যায় যে, ৫৬৮ থেকে ৬৪৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী কোনো সময়ে লেখা।

এ বিষয়ে অধ্যাপক থমাসের মতে, বার্মিংহাম গবেষকদের বক্তব্য যদি সঠিক হয় তাহলে এ কোরআন শরীফটি যিনি লিখেছিলেন তিনি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)’র  জীবনকাল সময়ে বেঁচে ছিলেন। যে মানুষটি এটি লিখেছেন তিনি মহানবী (সা.)’র পরিচিতও হতে পারেন। খুব সম্ভবত তিনি তাকে দেখেছিলেনও, তিনি হয়তো মুহাম্মদ (স.)’র মুখেই অনেক কিছু শুনেছিলেন। এমনও হতে পারে যে তাকে মুহাম্মদ (স.) ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন।

এদিকে, প্রাথমিকভাবে বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সন্ধান পাওয়া পাণ্ডুলিপির অংশবিশেষ সর্ব-সাধারণের জন্য প্রদর্শিত হবে। চলতি বছরের অক্টোবরে বার্মিংহামের বারবার ইনস্টিটিউটে প্রদর্শনের জন্য রাখা হবে প্রাচীন এ কোরআন শরীফ।

বিবিসি ও আন্তর্জাতিক সংবাদ অবলম্বনে

ঢাকা জার্নাল, জুলাই ২৩, ২০১৫।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.