শীর্ষ সংবাদসংবাদ শিরোনাম

ফটো সাংবাদিক আফতাব আহমেদ খুন

Aftab-Ahmod-2-660x330একুশে পদকপ্রাপ্ত ফটো সাংবাদিক আফতাব আহমেদ (৬৯) বুধবার ভোররাতে তার রামপুরার বাসায় খুন হয়েছেন। হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রামপুরা থানার পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।

রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) নাছিম আহমেদ জানান, ৬৩ ওয়াবদার রোড পশ্টিম রামপুরার চার তলা ভবনের ৩য় তলায় আফতাব আহমেদ একা থাকতেন। বুধবার সকালে কাজের বুয়া এসে আফতাব আহমেদের বাসার দরজায় ধাক্কা দেন। বুয়া আফতাবের সাড়া-শব্দ না পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ দরজা ভেঙ্গে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আফতাবের লাশ উদ্ধার করে।

ওসি আরো জানান, আফতাব আহমেদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হবে।
অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) শেখ মুহাম্মদ মারুফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বুধবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে তারা এ খবর পান। গতকাল সন্ধ্যা থেকে বুধবার সকালের মধ্যে তাকে হত্যা করা হয়েছে। আফতাব আহমেদের হাত-পা বাধা ছিল ও গলায় কাপড় পেচানো ছিল। মাথায় আঘাতের চিহ্নও ছিল। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে তার গাড়ি চালক কবীর ও রাজমিস্ত্রীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া আফতাব আহমেদের কাজের বুয়াকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে।

আফতাব আহমেদের মেয়ের জামাই স্টেট ইউনিভার্সিটির ডেপুটি রেজিস্ট্রার ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, পূর্ব রামপুরার ওয়াপদা রোডের ওই বাসায় তিনি একাই থাকতেন। সকালে গৃহকর্মী গিয়ে দরজায় ধাক্কা দেন। কিন্তু দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেয় হয়, পুলিশ দরজা ভেঙে ভেতেরে ঢুকে দেখেন হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মৃত পড়ে আছেন আফতাব।

তার বন্ধু ফটোগ্রাফার মো.জহিরুল হক জানান, আমার জানামতে তার কোনো শত্রু ছিল না। তাকে অর্থের লোভে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছি। আফতাব সবসময়ই তার কাছে নগদ অর্থ রাখতেন। তাই আমার কাছে মনে হচ্ছে, এই অর্থের জন্যই হত্যাকারীরা তাকে হত্যা করেছে।

আফতাব আহমদ ১৯৩৫ সালে রংপুর জেলার গঙ্গাচড়া থানার মহিপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে দৈনিক ইত্তেফাকে ফটোগ্রাফার হিসেবে যোগ দেন তিনি। ৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরে হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের ঐতিহাসিক ছবি ছাড়াও ’৭৫-এর ১৫ আগস্টে নিহত জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি, ৭ নভেম্বরে সিপাহী জনতার অভ্যুত্থান এবং দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বহু অমূল্য ছবি তার ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।

তবে ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষপীড়িত চিলমারি এলাকায় তার তোলা সম্ভ্রব রক্ষায় জাল পরিহিত বাসন্তী ও দুর্গতি নামের দুই যুবতীর ছবি দেশেবিদেশে বেশ আলোচিত হয়। এ ছবির জন্যই ২০০৬ সালে তাকে একুশে পদক দেয়া হয়।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.