অবরোধ শেষ, ১৫ জেলায় ব্যাপক সহিংসতা
অনেক জায়গাতেই রেললাইন খুলে ফেলা হয়েছে, কোথাও হয়েছে সড়ক অবরোধ। আবার অনেক জায়গায় শুধুই পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিন দিনের অবরোধে বাংলাদেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ জেলায় সহিংসতা হয়েছে। মূলত ১৫টি জেলায় এসব সহিংসতা সীমাবদ্ধ ছিল।
এসব জায়গায় জেলা সদর কিংবা উপজেলা পর্যায়ে সহিংসতা হয়েছে। সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী যেসব জেলায় বেশি সহিংসতা হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে – কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, ফেনী, সাতক্ষীরা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, নারায়ণগঞ্জ এবং সিরাজগঞ্জ। যেসব জেলায় তুলনামূলক কম সহিংসতা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে – নোয়াখালী, চাঁদপুর, খুলনা, জয়পুরহাট এবং পটুয়াখালী। অন্যান্য অনেক জেলায় মিছিল সমাবেশ হলেও সে রকম কোনো বড় সহিংস ঘটনা ঘটেনি।
মানবাধিকার কর্মী আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নূর খান লিটন বলেন, “অবরোধের সময় মূলত ঢাকার সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর অবরোধের চেষ্টা হয়।”
তিনি বলেন, “প্যাটার্ন দেখে মনে হচ্ছে ঢাকার সঙ্গে কিছু জেলা শহরের যোগাযোগ বিছিন্ন করাই মূল উদ্দেশ্য ছিল।”
এই অবরোধের সময় যেসব জেলায় সহিংসতা হয়েছে, সেখানে রেল ও সড়ক যোগাযোগের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এগুলোর মধ্যে চাঁদপুর-লাকসাম রুট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া এবং লালমনিরহাটে হয়তো রেললাইনের স্লিপার খুলে ফেলা কিংবা অন্যভাবে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়েছে।
এছাড়া সড়কপথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং ঢাকা-উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করা হয়েছে।
যে ১৫টি জেলায় সহিংসতা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গা আছে যেগুলো দেশের সার্বিক সড়ক যোগাযোগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ফেনী ও সীতাকুণ্ড এবং ঢাকা-উত্তরবঙ্গের মধ্যে সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, সহিংসতার ধরণ ক্রমাগত উগ্রতর হচ্ছে।
তিনি বলেন, সেসব জায়গায় এসব সহিংসতা হচ্ছে সেখানে বিরোধী রাজনৈতিক দলের শক্ত অবস্থান আছে বলে মনে হয়।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, “হরতাল বা অবরোধের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য এসব লাইফলাইনের (মহাসড়ক এবং রেল যোগাযোগ) চাপ তৈরি করা। এটা তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি।”
এ অবরোধের প্রেক্ষাপটে সরকার সড়ক ও রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করেছে এবং সেসব জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল জোরদার করেছে। সূত্র: বিবিসি