রবীন্দ্রনাথের ক্যামেলিয়া নিয়ে ছবি
চার দশক বড় কম সময় নয়। কিন্তু দেবকীকুমার বসুকে ভুলে যাওয়ার পক্ষে? সে বড় অল্প সময়। কিন্তু মৃত্যুর (১৯৭১) মাত্র চার দশকের মধ্যেই পরিচালক দেবকীকুমার বসু যেন চলে গিয়েছেন নির্বাক বিস্মৃতিতে। সময় বদলাচ্ছে, সিনেমা-র মানেও বদলে গিয়েছে অনেক। তবু, এই কলকাতায় কবিতা থেকে ছবি করার নিরীক্ষার সাহস দেখিয়েছিলেন দেবকীকুমার বসু। তাঁর পরিচালিত অনেক ছবিই এখন প্রায় বিস্মৃতির আড়ালে চলে গিয়েছে ‘নবজন্ম’, ‘সাগর সঙ্গমে’, ‘পথিক’, ‘অর্ঘ্য’, ‘ভগবান শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য’ এব ‘কবি’। তাঁর শেষ ছবি ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রজন্মশতবর্ষে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুরোধে তৈরি ‘অর্ঘ্য’। রবীন্দ্রনাথের চারটি কবিতা ‘পূজারিণী’, ‘অভিসার’, ‘দুই বিঘা জমি’ আর ‘পুরাতন ভৃত্য’ নিয়ে তৈরি সে ছবিতে নতুন নিরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন দেবকী বসু। রবীন্দ্রনাথের কবিতা নিয়ে সিনেমা তার পরেও হয়েছে। যেমন পার্থপ্রতিম চৌধুরীর ‘সুভা ও দেবতার গ্রাস’।
এ বার রবীন্দ্রনাথের কবিতা অবলম্বনে সিনেমার আর এক নব উদ্যোগ। ২৭ শ্রাবণ ১৩৩৯-এ লেখা রবীন্দ্রনাথের ক্যামেলিয়া কবিতা নিয়ে ছবি করছেন সজল সমাদ্দার। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের কবিতাটি এখানে অবলম্বন। তার উপরে ভিত্তি করে গল্প সাজানো হয়েছে। মূল চরিত্র সুবর্ণ চৌধুরী ফুটবল খেলোয়াড়। ফুটবলকে আঁকড়ে ধরে সে বেঁচে থাকতে চায়। ভালবাসে কবিতা পড়তে আর উত্তমকুমারের সিনেমা দেখতে। অফিস যাওয়ার পথে বাসে সে প্রেমে পড়ে কলেজপড়ুয়া কমলিকার। কিন্তু সে কথা কমলিকাকে জানাতে সাহসে কুলোয় না। বাসের সহযাত্রী চ্যাটার্জিবাবু মুশকিল আসানের ভূমিকায় নামেন। উপদেশ দেন কমলিকা সম্পর্কে খোঁজখবর করতে। তার পরে সুবর্ণ কমলিকার উদ্দেশে কালিম্পং পাড়ি দেয়। সেখানে না পেয়ে ফেরার উদ্যোগ করতে গিয়ে ফুটবলপ্রেমী এক বাঙালি পরিবারের ভাইবোন মোহনলাল-তনুকার সঙ্গে পরিচয় হয়। ফেরার সময় তনুকা ফেলে যাওয়া দিনগুলোকে স্মরণীয় করে রাখতে দুষ্প্রাপ্য অর্কিড ক্যামেলিয়া সুবর্ণর হাতে তুলে দেয়।
এ সিনেমায় অভিনয় করছেন মোটামুটি নতুনেরা- রাজা, তনিমা বসাক, সর্বাণী সাহা, সুজন মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। সিতাংশু মজুমদারের সঙ্গীত পরিচালনায় গাইছেন রাঘব চট্টোপাধ্যায়, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। প্রযোজনায় ‘ইনফোকেয়ার’।
লিখেছেন, শ
র্মিষ্ঠা দত্ত