শীর্ষ সংবাদসংবাদ শিরোনামসব সংবাদ

Cabinetঢাকা জার্নাল : সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অসদাচরণ তদন্ত ও প্রমাণে তিন সদস্যের একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের বিধান রেখে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অসদাচরণ ও অসামর্থ্য (তদন্ত) আইন, ২০১৬’র নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার (২৫ এপ্রিল) সকালে সচিবালেয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, এই আইনটি বিচারপতিদের মিস কন্ড‍াক্ট বা মিস ব্যবহার তদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগের বিচারপতিরাও অন্তর্ভুক্ত। বিচারকদের জন্য কিছু কোড অব কন্ডাক্ট তৈরি করা আছে। কোড অব কন্ড‍াক্টের ব্যতয় হলেই মনে করা হবে বিচারপতি অসদাচরণ করেছেন।

‘অপসারণের প্রক্রিয়া বিস্তরিত বলা আছে এই আইনে। কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে অসদাচরণের জন্য অভিযোগ আনতে চাইলে জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে তা জমা দিতে হবে। সেখানে সংশ্লিষ্ট বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিস্তারিত লিখতে হবে। অভিযোগকারী নিজ হাতে এফিডেভিট দেবেন যে, অভিযোগকারীর জ্ঞান ও বিশ্বাস মতে, অভিযোগটি সত্য।

অভিযোগকারীকে জমা করা অভিযোগের উৎসও উল্লেখ করতে হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

তদন্তের প্রক্রিয়া তুলে ধরে শফিউল আলম বলেন, অভিযোগটি প্রাথমিক তদন্তের জন্য ১০ জন সংসদ সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির কাছে  দিতে হবে। এ কমিটি গোপনীয়তা রক্ষা করে ৭ দিনের মধ্যে স্পিকারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।

‘অভিযোগটির প্রাথমিক সত্যতা নেই বলে প্রতীয়মান হলে স্পিকারকে তা জানাতে হবে এবং তা ক্লোজ করে দেওয়া দেবে। আর তা প্রাথমিকভাবে সত্য মনে হলে একটি প্রতিবেদন স্পিকারের কাছে দেবে কমিটি।’

তিনি বলেন, অভিযোগটি নিয়ে জাতীয় সংসদে গোপন বৈঠক হবে। বৈঠকে অধিকাংশ সদস্যের ভোটে (দুই-ত‍ৃতীয়াংশ) প্রস্তাবিত অভিযোগের তদন্ত করার প্রয়োজন মনে করলে তখন তার জন্যও একটি আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। এ কমিটিতে জাতীয় সংসদ সদস্য থাকবেন না।

তিন সদস্যের এ তদন্ত কমিটির চেয়ারম্যান থাকবেন সাবেক একজন প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের একজন সাবেক বিচারপতি। এছাড়া ওই কমিটিতে সাবেক একজন অ্যাটর্নি জেনারেল এবং একজন বিশিষ্ট নাগরিককে (অভিজ্ঞ) রাখা হবে। অ্যাটর্নি জেনারেলের ক্ষেত্রে বয়স ৬৭ বছরের কম হলেও চলবে। তবে অন্যান্যেদের ক্ষেত্রে ৬৭ বছরের বেশি হতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, অভিযোগ গঠন করার আগে ১০ দিনের মধ্যে বিচারপতিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে।
বিচারপতি শারীরিক বা মানসিক অসমর্থ হলে ভিন্নতর তদন্ত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে তা তদন্ত হবে।

মিথ্যা অভিযোগে ২ বছরের দণ্ড

বিচারপতিদের বিরুদ্ধে যদি কেউ মিথ্য অভিযোগ আনেন তাহলে তার দুই বছর কারাদণ্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এই অভিযোগে সর্বোচ্চে ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে আইনে।

চূড়ান্ত অনুমোদনের আগেও অংশীজনের মতামত

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন,  প্রাথমিকভাবে এ আইনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আলাপ-আলোচনা করে তারপর চ‍ূড়ান্ত করা হবে।
তবে এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির মতামত চাওয়া হলেও তিনি তা দেননি বলে জানিয়েছেন শফিউল আলম।

ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ২৫, ২০১৬, আপডেট: ১৬১০ ঘণ্টা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.