ফেলানী হত্যার পুনর্বিচার ফের শুরু ১৭ নভেম্বর
ঢাকা জার্নাল: ফেলানী হত্যা মামলার পুনর্বিচার কার্যক্রম আবারও শুরু হচ্ছে। ভারতের কুচবিহারে বিএসএফের সেক্টর সদর দপ্তরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টে মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলামের আগামী ১৭ নভেম্বর বিএসএফের আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ।
এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মেজর এটিএম হেমায়েতুল ইসলাম। তিনি জানান, বিএসএফের ১৮১ ব্যাটালিয়নের পক্ষ থেকে কমান্ডেন্ট ভিপি বাদলা শুক্রবার দুপুরে টেলিফোনে এ কথা জানিয়েছেন।
সাক্ষ্য দেয়ার জন্য ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম, বিজিবি পরিচালক ও সরকার পক্ষের আইনজীবীকে রোববার ভারতে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। পরদিন সোমবার নুরুল ইসলামসহ তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলকে বিশেষ আদালতে উপস্থিত উপস্থিত থাকারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে রোববার ভারতের উদ্দেশে রওনা করবেন তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন নুর ইসলাম, বিজিবির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মেজর এটিএম হেমায়েতুল ইসলাম, সরকার পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন (পিপি)।
এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল সকাল সাড়ে ৯টায় একই আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার জন্য ভারতের যাওয়ার জন্য রওয়ানা হয়ে লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়ি এলাকা থেকে পুনর্বিচার কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় ফিরে আসেন।
ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম জানান, তাকে ভারতে যাওয়ার উদ্যেশ্যে শনিবার বিজিবি কুড়িগ্রাম সদর দপ্তরে ডাকা হয়েছে । হত্যার সুষ্ঠু বিচার পেলে তার মেয়ের আত্মা শান্তি পাবে বলে জানান তিনি ।
সরকার পক্ষের আইনজীবি আব্রাহাম লিংকন জানান, এ মামলার জরুরী নিস্পত্তি উভয় রাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজন। কারন মামলার ইতিবাচক ফল আন্ত:রাষ্ট্রীয় সীমান্ত ব্যবস্থাপনার জন্য উদাহরণ হতে পারে। সে সঙ্গে ইতিবাচক রায়ের মাধ্যমে আসামীর সাজা নিশ্চিত হলে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার ভাবমুর্তি উজ্জ্বল হবে। আর এজন্য ফেলানীর বাবার সঙ্গে কুচবিহারে যাবেন বলে তিনি জানান।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারী বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী তার বাবার সঙ্গে ভারত থেকে ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাড়ী ফিরছিলেন। রাতে দালালের মাধ্যমে মই বেয়ে কাটাতারের বেড়া পার হবার সময় বিএসএফের গুলিতে নির্মম ভাবে প্রাণ হারায় সে। দীর্ঘ ৪ ঘন্টা তার লাশ ঝুলে থাকে কাটাতারের বেড়ায়।
এ ঘটনা দেশ-বিদেশের গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মীদের কাছে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তোলে। খোদ ভারতের গণমাধ্যমগুলোর সোচ্চার ভূমিকায় কোচবিহারের বিএসএফের বিশেষ আদালতে ২০১৩ সালের ১৩ আগষ্ট বিচারিক কার্যক্রম শুরু করে ভারত সরকার।
আদালতে সাক্ষ্য দেন প্রতক্ষ্যদর্শী ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম ও মামা আব্দুল হানিফ। কিন্তু অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমীয় ঘোষকে ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর বেকসুর খালাস দেয় বিশেষ আদালত।
ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ১৪, ২০১৪।