৫ দিনের রিমান্ডে শফিক রেহমান
ঢাকা জার্নাল: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় সিনিয়র সাংবাদিক শফিক রেহমানকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
শনিবার বিকেল ঢাকা মহানগর হাকিম মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এরআগে দুপুরে শফিক রেহমানকে আদালতে হাজির করে পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন ডিবির সহকারী পুলিশ সুপার হাসান আরাফাত।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, এই মামলার ঘটনার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে দেশে-বিদেশে অনেক আসামির সম্পৃক্ততা আছে, অর্থের যোগানদাতা, হুকুমদাতা ও মদদদাতা অনেকে আছে। অর্থ যোগানদাতা, হুকুমদাতা, মদদদাতা ও সহযোগী আসামিদের সনাক্ত করে গ্রেফতার এবং মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে আসামিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
রিমান্ড আবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, আসামি শফিক রেহমান দৈনিক যায় যায় দিন পত্রিকার প্রাক্তন সম্পাদক। তিনি দেশে ও দেশের বাইরে প্রভাবশালী ব্যক্তি। মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ। আসামি জামিনে মুক্তি পেলে দেশে-বিদেশে অবস্থানরত সাক্ষীদের বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে ও প্রলোভন দেখিয়ে মামলার তদন্তে বিঘ্ন সৃষ্টি করবেন এবং মামলার গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস বিনষ্ট করবেন- বিধায় তদন্ত সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে জেলহাজতে আটক রাখতে আবেদন করেন।
শুনানি শেষে বিচারক তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। শফিক রেহমানের পক্ষে শুনানি করেন সানাউল্লাহ মিয়া এবং মাসুদ আহমেদ তালুকদার। যে কোনো শর্তে তারা শফিক রেহমানের রিমান্ড বাতিলপূর্বক জামিন চান।
রাজধানীর ইস্কাটনের নিজ বাসা থেকে সকালে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জাসাসের সহ-সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন এবং দেশে ও দেশের বাইরে অবস্থানরত বিএনপির উচ্চপর্যায়ের নেতারা জয়কে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্র করছে। প্রাপ্ত তথ্যসমূহ পর্যালোচনা করে সন্দেহ করা হচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, বাংলাদেশসহ বিশ্বের যে কোনো দেশে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের নেতৃত্ব সজীব ওয়াজেদ জয়ের জীবননাশসহ যে কোনো ধরনের ক্ষতির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন। এই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে বিএনপির হাই কমান্ড দেশ ও দেশের বাইরে থেকে অর্থায়ন করছে।
২০১৫ সালের ৪ আগস্ট ডিবির পরিদর্শক ফজলুর রহমান এ বিষয়ে পল্টন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন, যা পরে মামলায় রূপান্তরিত হয়। শফিক রেহমানকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
২০১৫ সালে এফবিআইকে ঘুষ দেওয়ার কারণে মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের ছেলে রিজভী আহমেদ সিজারকে ৪২ মাসের কারাদণ্ড দেয় দেশটির আদালত। বাংলাদেশি এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সংরক্ষিত তথ্য পেতে ২০১১ সালে এফবিআইয়ের স্পেশাল এজেন্ট রবার্ট লাস্টিককে এ ঘুষ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশি ওই রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম মার্কিন আদালতের নথিপত্রে উহ্য রাখা হলেও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা জয়ই সে ব্যক্তি বলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ১৬, ২০১৬।