স্পটলাইট

হাসপাতালে ভর্তি ৪ শতাধিক, হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা,ওষুধ সংকট

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত সাত জন নিহত হয়েছেন। দগ্ধ ও আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চার শতাধিক। হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রয়েছেন। এরই মধ্যে হাসপাতালে দেখা দিয়েছে ওষুধ সংকট। এ অবস্থায় আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

দগ্ধদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও আশপাশের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি। শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

চমেক হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি কে এম তানভীর বলেন, ইতোমধ্যে ৪০০ এর বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। ২২০০ বেডের এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক-নার্স নেই। এ কারণে যারা মেডিক্যালে পড়ছেন, মেডিক্যাল জ্ঞান আছে তারাও এসেছেন চিকিৎসকদের সহায়তা করতে। রোগীদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করছেন তারা। এরপরও আমরা সেবা দিয়ে পারছি না।

তিনি বলেন, আহত ও দগ্ধদের মধ্যে আনসার সদস্য আছেন ৪৩ জন, পুলিশ সদস্য ১০ জন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মী আছেন সাত জন। এছাড়া ডিপোর শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ মিলে চার শতাধিক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শামীম আহসান বলেন, আহত ও দগ্ধ অবস্থায় এ পর্যন্ত চার শতাধিক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও রয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অনেকের রক্ত প্রয়োজন। রক্ত দিতে আগ্রহীদের জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে আসার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, ছুটিতে থাকা সব চিকিৎসক-নার্সকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এত সংখ্যক রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত ওষুধ মজুত নেই। এজন্য জরুরি ভিত্তিতে ওষুধ, স্যালাইন, পেইনকিলার নিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর অনুরোধ করছি সবাইকে। সেই সঙ্গে আশপাশের উপজেলা ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসক আনা হয়েছে। তবু চিকিৎসা দিয়ে পেরে উঠছি না আমরা।

চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রাজিব পালিত বলেন, দগ্ধদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। তাদের চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে রক্তের প্রয়োজন। এ জন্য রক্ত চেয়ে মাইকিং করা হচ্ছে। আশপাশের সবাইকে হাসপাতালে এসে রক্ত দিয়ে আহতদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, এ পর্যন্ত সাত জন নিহত হয়েছেন। দগ্ধ ও আহত অবস্থায় চার শতাধিক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা চলছে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, দগ্ধ ও আহতদের আশপাশের হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশপাশের উপজেলা ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসক আনানো হয়েছে। সবার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।

চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক নিউটন দাশ বলেন, এখনও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। এরই মধ্যে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা পানির ব্যবস্থা করছি।