হামলার আগেই প্রতিরোধ
ঢাকা জার্নাল : জঙ্গি-সন্ত্রাস প্রতিরোধে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। সন্ত্রাসী হামলা আগে থেকেই প্রতিরোধ করবো বলেও জানান তিনি।
সোমবার (১৬ মে) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর এসব কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গি-সন্ত্রাস মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো। সন্ত্রাসী হামলায় আক্রান্ত না হয়ে ঘটনা ঘটার আগেই থেকেই প্রতিরোধ করবো। প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা হয়েছে, আমরা একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো’।
প্রিন্সিপ্যাল ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি ইউলিয়াম ই টুড’র নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল পৌনে চারটা পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
কূটনৈতিক পাড়ার নিরাপত্তা নিয়ে বার্নিকাটের উদ্বেগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কূটনৈতিক পাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করেছি। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছি। পোশাকি পুলিশ ছাড়াও সাদা পোশাকের পুলিশ, গোয়েন্দা নজরদারি ও অন্যান্য নিরপত্তা বাড়িয়েছে। গাড়ি মোটরসাইকেল এবং পায়ে হেঁটেও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে আইন-শৃঙ্ঘলা বাহিনীর সদস্যের মাধ্যমে। প্রয়োজনীয় চেকপেস্টও বসানো হয়েছে’।
বার্নিকাট বলেন, জঙ্গি-সন্ত্রাস (কাউন্টার টেরোরিজম) মোকাবেলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সচিব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সুশীল সমাজ, সাংবাদিক ও নাগরিকদের একযোগে সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধে কাজ করতে হবে। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র প্রযুক্তিগত সব সুবিধা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের সন্ত্রাস দমনের পরিকল্পনা ও পদক্ষেপের প্রশংসা করেন বার্নিকাট। তবে কূটনৈতিক জোনে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সরকারকে এ ব্যাপারে আরো পদক্ষেপ নিতে হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে এসেছেন প্রতিনিধিরা। তারা এক্সপার্ট নিয়ে এসেছেন। তারা তাদের ইচ্ছার কথা আমাদের বলেছেন। আমরা বলেছি, সারা পৃথিবী কাউন্টার টেরোরিজমে আক্রান্ত। বাংলাদেশেও বিচ্ছিন্নভাবে দু’একটি ঘটছে। আমি সব সময় বলি, বাংলাদেশে আমরা হোম গ্রোন সন্ত্রাসীর দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছি। আমরা আর এ টেরোরিস্টদের মাধ্যমে আক্রান্ত হতে চাই না। আমরা আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকেই প্রতিরোধ করতে চাই। আক্রমণ আগে থেকেই চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধ করতে চাই।
‘আমরা বলেছি, বাংলাদেশের মানুষ শান্তিকামী। এখানে বড় বড় ঘটনা ঘটে না। কারণ, এখানকার মানুষ এটা পছন্দ করেন না। তাছাড়া আমরা পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এমনভাবে সাজিয়েছি যে, এমন ঘটনা ঘটছে না। বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। এখানে ধর্মের বিষয়ে কাউকে প্রাধান্য দেওয়া হয় না। সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে চলাচল করেন। তারা আমাদের বক্তব্য গ্রহণ করেছেন’।
তবে এখানে অনেক ধরনের ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
কারা ষড়যন্ত্র করছে এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি, দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্র হচ্ছে’।
ঢাকা জার্নাল , মে ১৬, ২০১৬