সব সংবাদস্পটলাইট

হাতের সঙ্গে ইউএনও ওয়াহিদার ডান পায়েরও উন্নতি

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার আরও উন্নতি হয়েছে। তিনি ডান হাত পুরোটা নাড়াতে পারছেন। এমনকি ডান পাও কিছুটা নাড়াতে পারছেন। ওয়াহিদা খানমের চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড প্রধান অধ্যাপক ডা. জাহেদ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে একই হাসপাতালে ভর্তি ওয়াহিদা খানমের বাবার অবস্থারও উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড প্রধান অধ্যাপক ডা. আব্দুস সালাম। সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এই দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসব তথ্য জানান।

ওয়াহিদা খানমের বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর শেখকে গত ১২ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাবা-মেয়ে দুই জনই এখন এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর দিনগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনও’র সরকারি বাসভবনে ঢুকে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। প্রথমে গেটের দারোয়ানকে বেঁধে ফেলে তারা। পরে বাসার পেছনে গিয়ে মই দিয়ে উঠে ভেনটিলেটর ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে হামলাকারীরা। ভেতরে ঢুকে ভারী ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং আঘাত করে ইউএনও ওয়াহিদাকে গুরুতর আহত করে তারা। এ সময় মেয়েকে বাঁচাতে এলে বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে (৭০) জখম করে দুর্বৃত্তরা। পরে তারা অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। ভোরে স্থানীয়রা টের পেয়ে তাদের উদ্ধার করেন।

ওয়াহিদাকে প্রথমে রংপুরে ও পরে রংপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে ঢাকায় এনে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর গত ৩ সেপ্টেম্বর রাতে অধ্যাপক ডা. জাহেদ হোসেনের নেতৃত্বে তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।

সোমবার অধ্যাপক ডা. জাহেদ হোসেন বলেন, ‘ওয়াহিদা খানম আগের চেয়ে আরও ভালো আছেন। তার ডান হাত এখন পুরোটাই নাড়াতে পারছেন তিনি। একইসঙ্গে পা-ও নাড়াতে শুরু করেছেন। আর তার চেতনা তো আগেই ফিরেছে। কথা বলছেন, খাওয়া-দাওয়া করছেন।’

ওয়াহিদাকে এইচডিইউ (হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট) থেকে কেবিনে নেওয়ার কথা থাকলেও এখন সেটা করা হবে না জানিয়ে অধ্যাপক জাহেদ হোসেন বলেন, ‘তার শারীরিক অবস্থার কথা চিন্তা করেই আমরা তাকে কেবিনে স্থানান্তর করবো না।’

এদিকে ওয়াহিদা খানমের বাবা ওমর শেখের শারীরিক অবস্থারও উন্নতি হয়েছে বলে জানায় মেডিক্যাল বোর্ড। ওয়াহিদার চিকিৎসায় গঠিত ১২ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান ও নিউরো ট্রমা অ্যাক্সিডেন্ট অ্যান্ড ইমার্জেন্সি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘রংপুরে তিনি ভর্তি ছিলেন। এখন আমাদের হাসপাতালে এসেছেন। রংপুরে যখন ভর্তি ছিলেন তখন তার দুই হাত এবং দুই পা-ই প্যারালাইসিস ছিল। কিন্তু দুই পা এখন পর্যন্ত না নড়লেও দুই হাত ভাঁজ করতে পারছেন। মুষ্টি করতে পারেন আংশিক। কিন্তু ‍পুরোটা এখনও পারছেন না। কনুই ভাঁজ করতে পারেন। শোল্ডার নাড়াতে পারেন। কিন্তু শক্তি পুরোটা আসেনি এখনও।’ অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, ‘রংপুরে তার যেসব পরীক্ষা হয়েছিল তাতে কিছু সমস্যা ধরা পড়েছে। আমরা নতুন করে আবার কিছু পরীক্ষা করবো। সব রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর সেগুলো পর্যালোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’