Lead

স্কুলের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে সড়কে দাঁড়ালেন মেয়র আইভী

ঐতিহ্যবাহী ‘নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরি স্কুলের’ নাম পরিবর্তন করায় এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। এ ছাড়াও নানা দাবি করেছেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করা প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সামনে প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। মেয়র আইভী ওই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।

মানববন্ধনে আইভী বলেন, ‘স্কুলের নাম পরিবর্তন করে আমাদের মনে ও ইতিহাসকে আঘাত করা হয়েছে। তাই আমাদের দাবি না মানা হলে নিজেরাই স্কুলের সাইনবোর্ড খুলে ফেলবো এবং স্কুলের মূল নামের সাইনবোর্ড টানিয়ে দেবো। প্রশাসন যদি আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো না মানে তাহলে আমরা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাই যথেষ্ট। আমাদের বাধ্য করবেন না। আশা করি জেলা প্রশাসক আমাদের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সুষ্ঠু সমাধান দেবেন।’

তিনি বলেন, ‘স্কুলের নতুন ভবনের নাম ডিসি রাব্বি (সাবেক জেলা প্রশাসক) কেন করা হবে। এই ভবনটি প্রয়াত প্রধান শিক্ষক আয়েশা জালালের নামে নামকরণ করার দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়াও আমাদের পুরোনো ভবনটিতে অনেক স্মৃতি রয়েছে। এটা ভাঙা যাবে না। এটা সংরক্ষণ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

 

মানববন্ধনে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বর্তমান জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ সম্প্রতি ‘নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরি স্কুলের’ নামের সঙ্গে ‘কালেক্টরেট’ শব্দ যুক্ত করে নাম পাল্টে দিয়েছেন। বর্তমানে স্কুলটির নামকরণ করা হয়েছে ‘নারায়ণগঞ্জ কালেক্টরেট প্রিপারেটরি স্কুল’। এ ছাড়াও স্কুলের নতুন ভবনের নামকরণ সাবেক জেলা প্রশাসকের (রাব্বি মিয়া) নামে দেওয়ায় প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি পুরোনো ভবনটিও ভেঙে ফেলার পাঁয়তারা চলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজবলেন, ‘এটা আমার নলেজে নেই। মানববন্ধন করে থাকলে আমাকে হয়তো জানাবে। নাম পরিবর্তনের বিষয়ে একটা উদ্দেশ্য ছিল। সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় চাচ্ছিল, কালেক্টরেট কর্তৃক পরিচালিত স্কুল হলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় স্পেশাল কেয়ার দেবে। যেহেতু এই স্কুলের মালিক কালেক্টরেট এবং কালেক্টরেট কর্তৃক পরিচালিত হয়ে আসছে ৬০-৭০ বছর ধরে, এ জন্য স্কুলের নামের আগে প্রিপারেটরি ঠিক রেখে কালেক্টরেট বসানো হয়েছে। এটা প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কষ্টের কারণ হলে আমরা তাদের নিয়ে বসে বিষয়টা বোঝানোর চেষ্টা করবো। এরপরও জনগণের দাবি থাকলে সেটা বিবেচনা করা যেতে পারে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল সরকারের কাছ থেকে স্কুলের জন্য সহযোগিতা নেওয়া।’

নতুন ভবনের নামকরণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে আমি আপত্তি মনে করি না। ১৯৬৩ সালে একজন ডিসি নিজস্ব টাকায় স্কুলের জায়গা কিনেছিলেন। সেখানে যদি একজন ডিসি নিজের উদ্যোগে ভবন করে তার নিজের নামে নামকরণ করে থাকেন, এটাতে আহামরি কোনও অন্যায় দেখি না।’