Leadশিক্ষা-সংস্কৃতিসব সংবাদ

স্কুলগামী শিশুদের ৬১ শতাংশের বেশি পর্ণগ্রাফি দেখে

ঢাকা জার্নাল: দেশের ১১ থেকে ১৫ বছরের স্কুলগামী পুরুষ শিশুদের মধ্যে পর্ণগ্রাফি দেখে ৬১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ৫০ দশমিক ৭৫ শতাংশ স্কুলগামী শিশু পর্ণগ্রাফি ইন্টারনেটে মাধ্যমে সার্চ করে। আর স্কুলগামী পুরুষ শিশুদের ৬৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রথম পর্ণগ্রাফি দেখে বন্ধুদের সঙ্গে।

রবিবার (২৯ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘প্রিভেন্টিং জেন্ডার বেইসড ভায়োলেশন ইনভলবিং উয়ুথ ইন বাংলাদেশ’শীর্ষক সংলাপে এ পরিস্থিতি তুলে ধরে সেন্টার ফর মেন অ্যন্ড মাসকিউলিন স্টাডিজ (সিএমএমএস)।

দেশের শিশুদের এই পরিস্থিতিকে চরম ঝুকিপূর্ণ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের অভিমত, সমাজ পরিবর্তণের ধারা শিশুদের গ্রহণ করার মতো মনস্তাত্তিক পরিবেশ বা পরিমণ্ডল তৈরি হয়নি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রে। এর কারণ পুরুষের অর্থ ও ক্ষমতা লিপ্সা এবং ধর্মীয় ধর্মীয় অপব্যাখ্যা।

সংলাপে সেন্টার ফর মেন অ্যন্ড মাসকিউলিন স্টাডিজ (সিএমএমএস) এর গবেষণা থেকে আরও জানানো হয়, স্কুলগামী এসব পুরুষ শিশুদের মধ্যে ৫৬ দমমিক ২ শতাংশ শিশু মনে করে পরিবারের সিদ্ধান্ত নেবে পরুষরা। দেশের ৫৭ শতাংশ ৪৫ শতাংশ শিশু কোনো না কোনোভাবে জোর করে যৌন চাহিদা মেটানোর পক্ষে। নারীরা বাইরে ফ্রিকোয়েন্টলি চলাচল করবে না এমনটা মনে করে স্কুলগামী শিশুদের ৬৬ দশমিক ২ শতাংশ। বয়ঃসন্ধিকালে পিতা-মাতার কাছ থেকে দূরে থাকতে চায় ৬৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ পুরুষ শিশু।

পর্ণগ্রাফি দেখার পর প্রতি দুই জন বালকের মধ্যে একজন যৌনহয়রানীতে উদ্বুদ্ধ হয়। যৌন বিষয় নিয়ে আলোচনা নিষিদ্ধ মনে করে, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই তথ্য জানে তাদের বন্ধদের কাছ থেকে এবং ইন্টারনেট থেকে পাওয়া ঝুঁকিপুর্ণ ইস্যু থেকে।

দেশের ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ২৭ দমমিক ১৫ শতাংশ শিশু পর্ণগ্রাফি থেকে যৌন বিষয় জানতে পারে। বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে পারে ২৭ শতাংশ শিশু। আর ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানতে পারে ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ শিশু।

ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার না জেনেই স্কুলগামী শিশুদের মধ্যে সহজেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করার সুযোগ নেয় ৮৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ইন্টারনেট ব্রাউজ করে ৬২ দশমিক ৩৫ শতাংশ। দেশের ৫৮ শতাংশ পুরুষ শিশু মনে করে জোর করে নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা বীরোচিত ব্যাপার।

পুরুষদের অর্থ ও ক্ষমতার লোভের কারণেই এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত। তিনি বলেন, ‘শুধু পুরুশালী মনোভাবের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে, এটাকে আমি সহজভাবে দেখি না। এটা শুধু বায়োলজিক্যালী নয়। এটা মসস্তাত্তিক। যখন থেকে কৃষি বিপ্লব হয়েছে তখন থেকে। তা যদি না হতো তাহলে এথেন্সে একজনও বিচারপতি ছিলেন না। বিচারপতি হতে পেশি শক্তি লাগে না। এলিজাবেথ যখন রানী হন তখন একজনও তার পার্লামেন্টে নারী ছিলেন না। তখন একজনও নারী গায়ক ছিলেন না। একজনকে রানী করে করে সব পুরুষরাই ক্ষমতাই চালিয়েছেন।’

মায়ের পেটে শিশুদের মনস্তাত্তিক বিকাশে গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করে অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাত বলেন, মাতৃগর্ভে শিশুর ৫০ শতাংশ ডেভেলপমেন্ট হয়। তার স্নায়ু সার্কিটে শতকারা ৫০ ভাগ নিয়ে আসে আন্মের আগে। বাকি ২৫ শতাংশ ভূমিষ্ট হওয়ার চার বছরের মধ্যেই ডেভেলপমেন্ট হয়। আর বাকি ২৫ শতাংশ ২৫ বছর বয়সে হয়।

এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের সুপারিশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, ‘পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার কারণে এমনটা ঘটছে। এখানে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা রয়েছে, আকাশ সংস্কৃতি গহণ করার মতো অর্থনৈতিক, মনস্তাত্তিক এবং সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল গড়ে ওঠেনি। আমাদের যে পরিবর্তনণশীলতার সঙ্গে আমরা খাপ খাওয়াতে পারিনি। তাই আমার সহকর্মী আমার ভাই সবার মনস্তাত্তিক পরিবর্তণ আনতে হবে।’

সেন্টার ফর মেন অ্যন্ড মাসকিউলিন স্টাডিজ (সিএমএমএস) এর চেয়ারপারসন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. শাইখ ইমতিয়াজ জানান বলেন, রংপুরের গঙ্গাচড়ায় সবচেয়ে বেশি য়াজ মাহফিল হয়েছে। সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান হয়নি। কিন্তু জেন্ডার ভায়েলেন্সে বেড়েছে।’

পরিস্থিতি সমালাতে মনস্তাত্তিক পরিমণ্ডল তৈরির পরামর্শ দেন ইউএনডিপির হিউম্যান রাইটস প্রোগ্রামের চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজর শারমিলা রসুল। তিনি বলেন, ‘জেন্ডার সহিংসতা উন্নত দেশ আর উন্নয়নশীল দেশে প্রায় একই।

ঢাকা জার্নাল, জুলাই ৩০, ২০১৮।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.