সেন্টার অব এক্সিলেন্স হবে বার্ন ইনস্টিটিউট
ঢাকা জার্নাল: আমাদের দুর্ভাগ্য ৭৫ পরবর্তী সময় যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলো, তারা সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা ভাবেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৬ এপ্রিল) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটটিকে ইনস্টিটিউটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে ‘শেখ হাসিনা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি’ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্য দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটটিকে ইনস্টিটিউটে পরিণত করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশের মানুষের যেসব মৌলিক অধিকার রয়েছে তা পূরণ করা যেকোনো সরকারের দায়িত্ব। আমরা সেই কাজ করে যাচ্ছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের পরে যত মুক্তিযোদ্ধারা অসুস্থ ছিলো, অনেক নারীরা নির্যাতিত হয়েছিলো। সেসব যুদ্ধ বিধ্বস্ত মানুষের কথা ভেবে জাতির পিতা পঙ্গু হাসপাতাল নির্মাণ করেছিলেন। বিদেশ থেকে চিকিৎসক নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য ৭৫ পরবর্তী সময় যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলো, তারা সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা ভাবেনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন নেত্রী সরকার উৎখাত না করে ঘরে ফিরবেন না ঘোষণা দিয়ে তার অফিসে বসে থেকে ৯৩ দিন ধরে মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দেন। মানুষ পুড়িয়ে মারা রাজনীতি না। আমরা রাজনীতি করি মানুষের জন্য। সেই মানুষকে পুড়িয়ে মারা পরে কিভাবে তারা সমর্থন পাবেন বলে আশা করেন, প্রশ্ন রাখেন তিনি।
বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমি বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানাবো তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে পোড়া মানুষদের সুস্থ্য করে তুলেছেন। অনেককে তো বাঁচানোই সম্ভব হয়নি।
সেনাবাহিনী আমাদের কথা দিয়েছে দ্রুততম সময়ে এর নির্মাণ কাজ শেষ করে দেবে। সেই সঙ্গে একটি সংযোগ সড়ক চাই, যেন অল্প সময়ে মানুষ এখানে আসতে পারে। আমি আশা করি, এই প্রতিষ্ঠান সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমরা তৃণমূল পর্যায়ে চিকিৎসক বাড়াচ্ছি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে রেফারেন্স ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আগে রোগী এসে ঘুরে বেড়াতো- কোথায় যাবে, কি করবে। এখন চিকিৎসকরা নির্দেশনা দিয়ে দেন রোগীকে কি সেবা দিতে হবে। অনেক রোগী যেন একসঙ্গে না থাকে সে জন্য আমরা ইউনিটে ভাগ করে দিয়েছি। আমাদের দেশের বহু মানুষ বিদেশে চলে যায় চিকিৎসা নিতে। ধনী মানুষ যারা তারা যেতে পারেন। কিন্তু সমমানের চিকিৎসা আমাদের দেশে পাওয়া যাবে না এটা আমি বিশ্বাস করি না।
এসময় হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রতি আরও সচেতন হওয়ার জন্য আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এই দেশের এক নারী নেত্রী খালেদা জিয়া দেশের নারী-পুরুষ-শিশুদের পুড়িয়েছিলো। অন্যদিকে শেখ হাসিনা মায়ের মমতা নিয়ে কিভাবে সেসব দগ্ধদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা দেখা যাচ্ছে। নিমতলী থেকে শুরু করে এখন যেভাবে প্রধানমন্ত্রী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাতে তার নামে ভবন স্থাপন করার সিদ্ধান্ত সঠিক হয়েছে বলে আমি মনে করি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম।
তিনি প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাইদ খোকন, সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, ঢামেক বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ০৬, ২০১৬।