শীর্ষ সংবাদ

সাভার ট্র্যাজেডি : শাহানারার খোঁজ মেলেনি মধ্য রাতেও

dhaka351ঢাকা জার্নাল: হতভাগী কুষ্টিয়ার শাহানার সন্ধান মেলেনি মধ্য রাতেও। তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে আগুন লেগে উদ্ধারকর্মীরা কোন রকমে প্রাণে ফিরলেও আর উদ্ধার করা যায়নি। এক পর্যায়ে রাত পৌনে ১২টার দিক থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু আগুন নিশ্চিত হওয়ার পরে সেটিও বন্ধ হয়ে পড়ে।

শাহানাকে উদ্ধার করতে গিয়ে যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে তা নেভানোর চেষ্টা করা হয় পানি দিয়ে। এ খবর লেখা পর্যন্ত রাত দুইটায় দমকল বাহিনী পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছিলেন। এ সময় পর্যন্ত দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ বন্ধ ছিল।তখনও শাহানরার কোন খোঁজ করা সম্ভব হয়নি। জানা যায়নি সে জীবিত্ আছে নাকি নেই।

রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে হতাহতদের উদ্ধার অভিযানের সর্বশেষ অবস্থা জানাতে রোববার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সেনাবাহিনীর তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগ আইএসপিআর।

এর আগে রোববার রাত ১১টায় আইএসপিআরের জনসংযোগ পরিচালক শাহিনুর ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আজ (রোববার)  সকাল ৯টায় আমরা জানতে পারি ভেতরে বেশ কয়েকজন জীবিত আছেন। দুপুর ২টায় আমরা তাদের অবস্থান সনাক্ত করে কাজে নেমে পড়ি।” 

তিনি বলেন, “ ক্যাপ্টেন হাসান, লে. আশরাফ, ফায়ার সার্ভিসের চারজন- হারুন, রব, জলিল, খায়ের এবং দু’জন সিভিলিয়ান- আজিজ ও ডা. মুরাদ এই ৮ জনের একটি দল ওই ৪ জনকে উদ্ধারের জন্য ভেতরে ঢোকে। কিন্তু তাদের মধ্যে ৩ জনের সাড়া শব্দ না পেলেও কুষ্টিয়ার শাহানার সাড়া-শব্দ মিলছিলো। কিন্তু তাকে উদ্ধারের জন্য যে কাটিং মেশিন দিয়ে রড কাটা হচ্ছিল সেখান থেকে স্পার্কিং হয়ে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। সেখানে অক্সিজেন থাকার কারণে আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে যায়, কারণ অক্সিজেন একটি দাহ্য পদার্থ।”

শাহিনুর বলেন, “হঠাৎ আগুন লাগায় উদ্ধারকর্মীরা অসুস্থ হয়ে কোনোরকমে নিজেদের বাঁচাতে সক্ষম হন।”

এ সময় উদ্ধার অভিযানে অংশ নেওয়া বেসামরিক লোকরাও গুরুতর আহত হন বলে জানান তিনি।

উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া ক্যাপ্টেন হাসান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সিঁড়ির নয়তলা থেকে আমরা তিনতলায় যাই। ওই সময় আমরা একজনকে কথা বলতে শুনি তবে বাকি তিনজনের থেকে কোনো সাড়া পাইনি। এ অবস্থায় আমি জিওসি স্যারের কাছে আসি। তিনি আমাকে জীবিত ব্যক্তিসহ বাকিদের উদ্ধারের নির্দেশ দেন। রাত ১০টা পর্যন্ত এ অভিযান চলে। আমরা শাহানাকে বাঁচাতে অনেকভাবে চেষ্টা করেছি। কিন্তু একট‍া বিমের আড়ালে থাকায় ওই সময় তাকে বের করা দুরুহ হয়ে পড়ে।”

তিনি আরও বলেন, “বিমের পাশে যে রড ছিলো ওই রড কাটার সময় স্পার্কিং হয়ে আগুন লেগে যায়। আমরা কোনোরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে ফেরত আসতে সক্ষম হই। কিন্তু শাহিনার সর্বশেষ অবস্থা আমরা বলতে পারছি না।”

সংবাদ সম্মেলন শেষে শাহিনুর ইসলাম বলেন, “একটা মিশন নিয়ে আমরা আজ এ অভিযানে নেমেছিলাম, সর্বশক্তি দিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করেছি। আমাদের মিশন হয়ত সফল হয়নি, কিন্তু মানবতার বিজয় হয়েছে। উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা সর্বশক্তি দিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে।”

ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ২৯, ২০১৩

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.