সরকার রাষ্ট্রের সকল অঙ্গ ইচ্ছামতো চালানোর চেষ্টা করছে
ঢাকা জার্নাল : প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা সম্পর্কে সরকারের দুই মন্ত্রীর (খাদ্যমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক) বক্তব্য ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর নগ্ন হস্তক্ষেপ ও আদালত অবমাননার শামিল’ বলে মনে করছে বিএনপি।
দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘প্রধান বিচারপতির সরে যাওয়া উচিত বা তিনি বিএনপি-জামায়াতের সুরে কথা বলছেন’ মর্মে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হক যে মন্তব্য করেছেন তাতে আবারও প্রমাণিত হলো, ’৭৫-র একদলীয় বাকশাল সব আগ্রাসী শক্তি নিয়ে পুনর্জন্ম লাভ করেছে।
রোববার (৬ মার্চ) বেলা ১১টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান ভোটারবিহীন ম্যান্ডেটবিহীন সরকার রাষ্ট্রের সকল অঙ্গ এবং প্রতিষ্ঠানসমূহ নিজেদের ইচ্ছামতো পরিচালিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এরা রাষ্ট্রের অঙ্গ যথাক্রমে আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতা ও এগুলোর স্বতন্ত্র আইডেন্টিটি মুছে ফেলে আওয়ামী ছাপ দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম প্রধান বিচারপতি অতিকথন করেন উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাহলে বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিক কি এই আওয়ামী শাসনামলে তার বিচারক জীবনে যেভাবে রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়েছেন এবং বিচারের নামে দেশের গুণী ব্যক্তিদের নির্যাতন করেছেন সেটা কি রবীন্দ্রসঙ্গীত ছিল, না কি গালিবের গজল ছিল। সেটাকে জনগণ কী হিসেবে গ্রহণ করেছেন, সেটা কি তিনি (বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিক) কখনো উপলব্ধি করেছেন? আইনের শাসনের পক্ষে ন্যায়সঙ্গত কথা বলা শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গেলেই তখন তারা সব মাত্রা ছাড়িয়ে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।’
বিএনপির এ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির ওপর এই আক্রমণ আইন অমান্যকারী অপরাধী গ্যাংদের সমতুল্য। প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্ত্রীদ্বয়ের বক্তব্য বর্তমান অবৈধ সরকারের একদলীয় শাসনের যাত্রাপথে চূড়ান্তভাবে সব সীমানা লঙ্ঘন করলো।’
রিজভী বলেন, ‘মন্ত্রীদ্বয়ের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে বক্তব্য চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ, হুমকিমূলক এবং রাজনৈতিক মাস্তানি। তাদের বক্তব্য আদালত অবমাননা। দুই মন্ত্রীর বক্তব্য ফেনীর হাজারী-কালচার’- বহিঃপ্রকাশ।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি, নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।