Leadসংবাদ শিরোনাম

২৪ অক্টোবরের পরও সংসদ চালানোর দাবি

Parlament-bg20131007091731
নবম সংসদের ‘শেষ’ অধিবেশন ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত হলেও তা আরো দীর্ঘ করার দাবি তুলেছেন সরকারি দলের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা।

২৪ অক্টোবর নির্বাচনের দিন গণনার শুরু থেকে বিরোধী দলের সরকার পতন আন্দোলনের হুমকির জবাব হিসেবে অধিবেশন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও মতিয়া চৌধুরী।

বুধবার অনির্ধারিত আলোচনায় সরকারি দলের সদস্যদের এই বক্তব্যের পর সংসদ আগামী ২৩ অক্টোবর বিকাল পর্যন্ত মুলতবি করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনের ফলে এখন সংসদের মেয়াদ শেষের আগের ৯০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ২৫ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে আগামী সংসদ নির্বাচন হবে। এই সময়ে সরকারে থাকে আওয়ামী লীগ এবং সংসদও বহাল থাকবে।

দলীয় সরকার এবং সংসদ বহাল রেখে নির্বাচনে না যাওয়ার হুমকি রয়েছে বিএনপির। নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি নির্বাচনের দিন গণনার শুরুতে সরকার পতনের আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে।

নির্বাচনের সময় সংসদের অধিবেশন বসার সুযোগ না থাকায় মনে করা হচ্ছে, চলতি ১৯তম অধিবেশনই নবম সংসদের শেষ অধিবেশন।

বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে গত ১২ সেপ্টেম্বর অধিবেশন শুরুর দিন স্পিকার বলেছিলেন, “২৫ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।”

সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল বলেন, “থ্রেট দেয়া হচ্ছে, হুঙ্কার করা হচ্ছে, বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই ২৪ অক্টোবরের পরেও সংসদের অধিবেশন চলা উচিত বলে আমি মনে করি।”

সংবিধানের ৭২ (৩) ধারা এবং ১২৩ (৩) ধারায় নির্বাচন ও সংসদ বহাল থাকা নিয়ে যা বলা আছে, তার ব্যাখ্যা তুলে ধরেন প্রবীণ এই সংসদ সদস্য।

“খালেদা জিয়া যে কোনো মূল্যে নির্বাচন ঠেকাতে হবে বলে বারবার বলে আসছেন। কিন্তু সংসদের মেয়াদ শেষ হলে সংবিধান অনুসারেই নির্বাচন হবে। ২৪ অক্টোবরের পরও সংসদ বসতে পারে। কারণ সংসদের মেয়াদ ২৪ অক্টোবর শেষ নয়।”

“২৫ অক্টোবর সংসদ বসতে পারে। শুক্রবার, শনিবার বাদে ২৮, ২৯, ৩০ তারিখ, ২ তারিখে সংসদ বসতে পারে। তবে নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করলে হয়ত সংসদ বসবে না।”

তোফায়েল বলেন, “কথায় কথায় বলেন, ২৫ অক্টোবর থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করবেন। এটা বলতেই পারেন। তাই বলে সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে হবে?”

সংবিধানে বিভিন্ন অনুচ্ছেদ ব্যাখ্যা করে ২৪ অক্টোবরের পরও সংসদ অধিবেশন চালিয়ে যাওয়ার দাবি জানান প্রবীণ সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও।

“উনি (খালেদা জিয়া) কোথায় পেলেন ২৪ তারিখ? কতদিন সংসদ চলবে সেটার ঠিক করার দায়িত্ব স্পিকারের। ২৪ তারিখ কোনো ‘রেড লেটার ডে’ না। ২৪ অক্টোবরের পরে সংসদ চলায় কোনো বাধা নেই। যত দিন ইচ্ছা সংসদ চলতে পারে।পাঁচ বছরের এক মুহূর্ত আগেও সংসদ ভাঙার অধিকার কারো নেই।”

নির্বাচনের সময়ে এমপিদের সুযোগ-সুবিধা থাকার বিষয়ে বিরোধী দলকে আলোচনায় আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “যেহেতু বিরোধী দলের নেত্রীও সংসদ সদস্য থাকবেন, তাই সেটা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে।

“সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী কেবল আরেকজন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন। মন্ত্রীরা নির্বাচন করতে পারবেন কি, পারবেন না, তা সংবিধানে বলা আছে।”

নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়া ‘রাষ্ট্রদ্রোহসম’ অপরাধ করেছেন দাবি করে সুরঞ্জিত বলেন, “অশান্তি করার দরকার নাই। নির্বাচনে আসেন, দ্যাখেন সুষ্ঠু হয় কি না।”

বিরোধী দলের হুমকির জবাবে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, “তিনি (খালেদা) কোনো একটা খেলা খেলছেন, এজন্য হুঙ্কারের পর হুঙ্কার দিচ্ছেন। অবশ্য হুঙ্কার দেয়া উনার স্বভাব।

“আগেও ধর্মের নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়েছে। এই খেলা আগেও দেখা আছে। তবে এক অস্ত্র দুইবার ব্যবহৃত হয় না।”

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কূটনীতিকদের ‘হস্তক্ষেপের’ সমালোচনা করে তাদের উদ্দেশে মতিয়া বলেন, “সীমা অতিক্রম করবেন না। এটাই জাতি আশা করে।”

জাসদ নেতা মঈনউদ্দিন খান বাদল বলেন, “কোনো (২৪ অক্টোবরের পর) অনিশ্চিত গন্তব্যে বাংলাদেশে যাত্রা করছে না। সংবিধান যদি মানেন তাহলে কীভাবে নির্বাচন হবে তার ব্যাখ্যা দেয়া আছে।

“নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচনে বিএনপিই প্রথম আসবে। দাবি করে বাদল বলেন, নির্বচান ছাড়া আপনাদের (বিএনপি) দ্বিতীয় কোনো উপায় নেই।”

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.