Lead

সংসদ ভবন এলাকা থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের কবর সরানোর দাবি চিফ হুইপের

একটি কমিশন গঠন করে সংসদ ভবন এলাকা থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের কবর সরানোর দাবি করেছেন সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম-চৌধুরী। বুধবার (২৪ আগস্ট) সংসদ ভবনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সম্পাদক এই দাবি করেন।

সংসদ সচিবালয়ের এই আয়োজনে চিফ হুইপ বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা সংসদের পক্ষ থেকে শোক দিবসের আলোচনা করি। এই সংসদ সেদিক থেকে পবিত্র হয়েছে। তবে আরেকটি অপবিত্রতা আমাদের বহন করতে হচ্ছে— সংসদ থেকে এখনও যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার নিশ্চিহ্ন হয়নি। আমি স্পিকারসহ সকলের কাছে আবেদন করছি, একটি কমিশন গঠন করে সংসদ থেকে স্বীকৃত রাজাকার, যুদ্ধাপরাধীদের কবর সরিয়ে ফেলা হোক।’

প্রসঙ্গত, সংসদ এলাকায় সাতটি কবর রয়েছে। সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তার, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমান ও আতাউর রহমান খান, সাবেক মন্ত্রী মশিউর রহমান যাদু মিয়া, মুসলিম লীগ নেতা খান এ সবুর, সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আবুল মনসুর আহমদ এবং পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার তমিজউদ্দীন খানের কবর রয়েছে সেখানে।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী শাহ আজিজ ও খান এ সবুরের কবর সংসদ এলাকা থেকে সরানোর দাবি বহু দিনের। এছাড়া সংসদ কম্পাউন্ডের পাশে চন্দ্রিমা উদ্যানে রয়েছে জিয়াউর রহমানের কবর। ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় জিয়া নিহত হওয়ার পর প্রথমে তাকে চট্টগ্রামে সমাহিত করা হয়েছিল, পরে সেখান থেকে কবর তুলে আনা হয় ঢাকায়।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার সংসদ ভবন এলাকায় নকশা ভেঙে গড়ে তোলা সব স্থাপনা সরিয়ে ফেলার ঘোষণা দিয়েছে। বলা হয়েছিল— সংসদ ভবনের স্থপতি লুই আই কানের নকশা দেশে আসার পর এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে নকশা আসার পর কয়েক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও কোনও উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই একটি আদর্শ, একটি দর্শন, তিনি চিরঞ্জীব। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও দর্শনকে ধারণ করে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে।

স্পিকার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনী বিশ্লেষণের মাধ্যমে বোঝা যায় যে তিনি ছিলেন নির্লোভ, নির্মোহ ও অদম্য সাহসী রাজনীতিবিদ, যিনি একাধারে বিশ্বমানবতার প্রতীক এবং মুক্তিকামী মানুষের নেতা। তিনি আমাদের একটি স্বাধীন দেশ, বিজয় পতাকা এবং পরিপূর্ণ দলিল হিসেবে বাহাত্তরের সংবিধান দিয়েছেন।’

বঙ্গবন্ধুর ২৩ বছরের আন্দোলন সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনীতিবিদসহ সকলের বঙ্গবন্ধুর গুণাবলী আত্মস্থ করা ও আত্মবিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর গুণাবলী অনুসরণ করে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে আত্মনিয়োগ করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর চেতনা, আদর্শ ও দর্শনকে নবীনদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াস গ্রহণ করতে হবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের এই সময়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সুখী, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গঠনে নবপ্রজন্মকে প্রত্যয়ী হতে হবে।’

সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব স্বপন কুমার বড়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ অগাস্টের শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।