Leadঢাকাশীর্ষ সংবাদসংবাদ শিরোনাম

শেয়ারবাজার কারসাজিতে ডিএসইর পরিচালক, তদন্তের নির্দেশ

ঢাকা জার্নাল ডেস্ক: 

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) স্বতন্ত্র পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে শেয়ার কারসাজি, কোম্পানির গোপন তথ্য আগাম জেনে অবৈধভাবে শেয়ার ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে তদন্তকালীন তাকে ডিএসইর পরিচালকের দায়িত্ব পালন না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব ফরিদা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে।

চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, ‌‘ডিএসইর পরিচালকই শেয়ার কারসাজিতে, রক্ষকই যখন ভক্ষক’ শিরোনামের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদের প্রভাবশালী সদস্য অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বিধি লঙ্ঘন করে কারসাজির মাধ্যমে ৩টি বিও অ্যাকাউন্টে ১৩ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছেন। আর এ কাজের মাধ্যমে তিনি তিনটি অপরাধ করেছেন মর্মে বলা হয়েছে। প্রথমত, তিনি স্টক এক্সচেঞ্জের পর্ষদে থেকে বেআইনি ও অনৈতিকভাবে শেয়ার লেনদেন করে সুবিধা নিয়েছেন। দ্বিতীয়, কারসাজির কারণে যেসব কোম্পানিকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, এর অধিকাংশের শেয়ার লেনদেন করে সুবিধা নিয়েছেন। তৃতীয়ত, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সহায়তায় পর্ষদ ভেঙে যেসব কোম্পানি দখল করা হয়েছে, এর সবকটি থেকেই তিনি আগাম তথ্য জেনে শেয়ার লেনদেন করে লাভবান হয়েছেন।

প্রতিবেদনে পত্রিকাটি আরও উল্লেখ করে, আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ডিএসইর পরিচালক পদে থাকার কারণে কোম্পানির গোপন সংবাদের সুযোগ কাজে লাগিয়ে পুঁজিবাজারে আস্থার সংকট তৈরি করেছেন এবং এর ফলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।

চিঠিতে অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ২১ ধারামতে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণসহ আরও কিছু ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এই স্বতন্ত্র পরিচালক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (বোর্ড এডমিনিস্ট্রেশন) রেজুলেশন ২০২৩ এর ধারা ৮ (২) (এ), ৮(২)(বি), ৮(২)(ডি), ৮(৩)(১)-সহ বিএসইসি এবং ডিএসই এ কর্তৃক অনুসৃত অন্যান্য আইন, বিধি, প্রবিধি অথবা নির্দেশনা পরিপন্থি কোনো কার্য করছেন কি না তা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ, তদন্তের স্বার্থে তদন্ত চলাকালীন সময়ে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে স্বীয় কার্য থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা প্রদান, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তদন্ত প্রতিবেদন মোতাবেক বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অনতিবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে অবহিত করতে হবে।

তবে মন্ত্রণালয়ের চিঠি না পেলেও আগে থেকেই শেয়ার কারসাজির বিষয়ে তদন্ত করছে ডিএসই।

মন্ত্রণালয়ের চিঠি এখনো পাননি জানিয়ে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা তদন্ত শুরু করেছি। তদন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে হবে, তদন্ত শেষ হলে এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলা যাবে।

স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচুয়ালাইজেশন (ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা আলাদাকরণ) আইন মেনে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার।