শুধু ডাল-ভাত খেয়ে কাটবে ওদের ঈদ
ঢাকা জার্নাল : দিন মজুর সালাউদ্দিন। ২৫ বছর ধরে মেঘনার তীরঘেঁষা দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। জোয়ারের পানিতে পুরো এলাকা তলিয়ে রয়েছে ৪ দিন। কাজ নেই, ঋণ করে পরিবারের মুখে তুলে দিচ্ছেন খাবার। স্ত্রীসহ ৮ সদস্যের পরিবারে ঈদের দিন শুধু ডাল-ভাত ছাড়া কিছুই তুলে দিতে পারবেন না তিনি।
বুধবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যার পর কান্নাভেজা কন্ঠে এ কথা জানান তিনি।
সালাউদ্দিন বলেন, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই একদিকে নদী ভাঙ্গন অন্যদিকে জোয়ারের পানি। এ কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে অন্য জায়গায় নতুন করে বসতি গড়ার স্বপ্ন দেখি। এনজিও থেকে ৫০ হাজার ঋণ নিয়েছি, কিন্তু এ টাকায় জমি কেনা যায় না। বেকার বসে থাকায় সেই টাকাও শেষ হয়ে গেছে, এখন ঋণও পরিশোধ করতে পারছি না।
এর মধ্যে ঈদ, পরিবারের মুখে হাসি নেই, নতুন জামা কাপড় কেনার সামর্থ্য নেই!
কেবল সালাউদ্দিন নন, তার মতো এমন অনেক সালাউদ্দিনের ভাগ্য ভাসছে জোয়ারের পানিতে। যাদের জীবন কাটছে যুদ্ধ করে।
তাই ভোলা সদরের ইলিশা ও রাজপুরে নেই ঈদ আনন্দ। বার বার ভাঙ্গনের শিকার এসব পরিবার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। ঈদের চাঁদ যেনো তাদের মুখ আরও মলিন করে দিচ্ছে।
দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের স্কুল ছাত্রী তানিয়া বলে, এ বছর ঈদের আনন্দ নেই, আছে পানিতে আটকে থাকার কষ্ট।
তানিয়ার বাবা ছিদ্দিকুর রহমান, পেশায় জেলে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সে সবার বড়। ঈদে ঘরে খাবার মতো কিছুই নেই।
আমাদের ভাত আর ডাল ছাড়া কিছুই জুটবে না- বলে সে।
জোয়ার আর নদীর ভাঙ্গন সব ভাসাইয়া লইয়া গেছে, স্যার কিছু কেনার সামথ্য নাই। নুন আর ভাত দিয়্যা কাটাবো ঈদের দিন।
এ প্রসঙ্গে রাজাপুর ইউপি সদস্য মাসুদ রানা বলেন, পুরো এলাকা জোয়ারে তলিয়ে রয়েছে, বিশেষ বরাদ্দ পেয়েছি মাত্র ১২০ জনের। সেগুলো বিতরণ করেছি, ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১শ’ পিস শাড়ি বিতরণ করেছি। চাহিদার তুলনায় যা সামান্য।
ঢাকা জার্নাল, জুলাই ০৭, ২০১৬