শিক্ষা-সংস্কৃতিস্পটলাইট

শিক্ষার্থী নেই, তবু মাদ্রাসা চালাচ্ছেন সুপার

কাগজে-কলমে মাদ্রাসা হলেও বাস্তবে কোনও শিক্ষার্থী নেই।নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার বাগাতিপাড়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসায় চলতি বছরের এসএসসি সমমান দাখিল পরীক্ষায় ওই প্রতিষ্ঠানের ১৫ পরীক্ষার্থীর নাম দেখানো হলেও অনুপস্থিত সবাই।

এই অভিযোগে তদন্তে দেড় বছর আগেই সত্যতা পায় প্রশাসন। ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছিল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। তবে নানা কৌশলে প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন মাদ্রাসার সুপার আব্দুর রউফ।

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পেড়াবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসার কেন্দ্র সচিব ইব্রাহিম হোসাইন ও কেরানি আনোয়ার হোসেন জানান, এবার পাঁচটি মাদ্রাসার মোট ১১৮ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে। অনেকেই পরীক্ষা দিলেও বাগাতিপাড়া মহিলা মাদ্রাসার ১৫ পরীক্ষার্থীর সবাই অনুপস্থিত। গত বছরও কেউ দাখিল পরীক্ষা দেয়নি ওই মাদ্রাসা থেকে।

বাগাতিপাড়া মহিলা মাদ্রাসা সুপার আব্দুর রউফ জানান, ২০০৩ সালে তিনি মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১১ সালে পাঠদানের অনুমোদন পেয়েছিলেন। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছেলেমেয়ে উভয়ে পড়ে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিতে শুধু মেয়ে শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে ১৩১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এ বছর ১৫ জন দাখিল পরীক্ষার্থী ছিল।  তবে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় কেউ পরীক্ষা দেয়নি।

এলাকবাসী জামাল জানান, শুরুতে কিছু শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে কোনও শিক্ষার্থী আছে বলে তার জানা নেই। কোনও শিক্ষার্থীকে যাতায়াত করতেও দেখেন না তিনি।

মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান মিঠু জানান, ২০০৫ থেকে ওই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছেন তিনি। ২০২০-এর ডিসেম্বর মাস থেকে প্রতিষ্ঠানে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুরুর দিকে ওই প্রতিষ্ঠানে কিছু শিক্ষার্থী থাকলেও গত ২ থেকে ৩ বছর কোনও শিক্ষার্থী নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা দেবী পাল জানান, প্রায় এক থেকে দেড় বছর আগে একটি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করা য়েছিল। ওই সময় ওই প্রতিষ্ঠানে কোনও শিক্ষার্থী ছিলেঅ না। প্রতিষ্ঠানটি চলমান রাখতে সুপার নানা কৌশল নিয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে কোন কাদের নাম দিয়ে মাদ্রাসা সুপার ১৫ শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ করেছেন তদন্ত করে দেখা হবে।

প্রতিবেদন লিখেছেন, কামাল মৃধা, নাটোর, প্রতিনিধি বাংলা ট্রিবিউন।