শিক্ষা-সংস্কৃতিসব সংবাদ

শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে সংযোগসহ হ্যান্ডসেট দাবি

পেঁয়াজ আমদানির মত দুই মাসের জন্য ৪জি ডিভাইস আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক প্রত্যাহার করে অপারেটরদের সঙ্গে চুক্তিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফ্রি অথবা ন্যূনতম মূল্যে সংযোগসহ হ্যান্ডসেট দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

মঙ্গলবার (১৮ আগষ্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘স্বল্প খরচে নিরবিচ্ছিন্ন দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা প্রাপ্তির প্রস্তাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ সংগঠনের সকল দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন।  তিনি বলেন, ‘দেশে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় শিক্ষার্থীরা। সরকারের উচিত কর কমিয়ে ফ্রি অথবা স্বল্পমূল্যে হ্যান্ডসেটসহ সংযোগ প্রদান করা। ‘ প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সৈয়দ আবুল মকসুদ।

ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান মারগুব মোর্শেদ বলেন, ‘কমিশন চাইলে ট্যারিফ শূন্য ঘোষণা করে তরঙ্গ বরাদ্দ দিতে পারে। তা কোন আইনগত সমস্যা হবে না। এতে গ্রাহকরা উপকৃত হবে। সেই সাথে সকল শিক্ষার্থীরা মানসম্পন্ন দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা পাবে। রাষ্ট্রও পর্যাপ্ত রাজস্ব আদায় করতে পারবে।’

সংবাদ সম্মেলনে সিপিবির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘কমিশনকে আমরা স্বাধীন দেখতে চাই। কমিশনের বক্তব্য সঠিক না। প্রধানমন্ত্রী বা অর্থমন্ত্রীর অনুমোদনই যদি প্রয়োজন হয় তাহলে কমিশন রেখে লাভ কি? প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আলাদা একটি সেল করেই তো কাজ চালানো যায়।’

ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর খালিদ মাহমুদ বলেন, “শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে আমরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছি। আরো অনেক আগেই সরকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন ছিল। দুই বা তিন বছরের চুক্তির ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মাঝে ১৫০০-২০০০ টাকার মধ্যে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সহ হ্যান্ডসেট প্রদানে সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসন করা উচিত।’

সংবাদ সম্মেলনে বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘মজুদদার ব্যবসায়ীদের মতো আচরণ সরকারের কাছে আশা করি না। তরঙ্গ জিম্মি করে সরকার ব্যবসা করুক এটা আমরা চাই না। তাই দ্রুত জাতীয় সম্পদ তরঙ্গকে জাতীয় স্বার্থে ব্যবহার করা হোক।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘গত ২৫ জুলাই ২০২০ “গ্রাহক স্বার্থরক্ষায় মানসম্মত টেলিকম সেবার জন্য পর্যাপ্ত তরঙ্গ বরাদ্দে প্রতিবন্ধকতা নিরসনে করণীয়” শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কমিশনের সদস্য (স্পেকট্রাম), ডিজি (স্পেকট্রাম), কোয়ালিটি সার্ভিসের ডিজি, উপ-পরিচালক, সিনিয়র সহকারী পরিচালক সহ অন্যান্য স্টেক হোল্ডারবৃন্দ।  উক্ত আলোচনায় কমিশনের চেয়ারম্যান সহ কমিশনের অন্যান্য অতিথিগণের বক্তব্যে যে বিষয়গুলি প্রতীয়মান হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তরঙ্গ স্বল্পতার কারণেই স্বল্প খরচে নিরবিচ্ছিন্ন দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা প্রাপ্তি সম্ভব হচ্ছে না।’

স্বল্প খরচে নিরবিচ্ছিন্ন দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা প্রাপ্তির প্রস্তাবনা:

* টেলিযোগাযোগ সেবার উপর আরোপিত করের হার কমানো।

* ফাইবার অপটিক্যাল নেটওয়ার্কের যুক্তিসঙ্গত মূল্য নির্ধারণ করা।

* আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নিরসন করা।

* নিরবিচ্ছিন্ন দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা প্রদানে গ্রাহক অনুপাতে পর্যাপ্ত তরঙ্গ নিশ্চিত করা। সরকার তরঙ্গের মূল্য কমিয়ে বা বিনামূল্যে প্রদান করে অপারেটরদের সাথে বিশেষ চুক্তিতে শিক্ষা, চিকিৎসা ও জরুরী প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ফ্রি বা অধিকতর কম মূল্যে গ্রাহকদের সেবা প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। সেই সাথে অব্যহৃত তরঙ্গসমূহ ব্যবহারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।

* পেঁয়াজ আমদানির মত দুই মাসের জন্য ৪জি ডিভাইস আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক প্রত্যাহার করে অপারেটরদের সাথে চুক্তিতে শিক্ষার্থীদের মাঝে ফ্রি অথবা ন্যূনতম মূল্যে সংযোগসহ হ্যান্ডসেট প্রদানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী আবু সালেহ, বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু বকর ছিদ্দিক, বাংলাদেশ মোবাইল রিচার্জ ব্যবসায়ী এসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলু, কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাবের আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।