শাহজাদপুরে ফের অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত ১৩ নারী-শিশু
ঢাকা জার্নাল : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আবারও অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছে নারী ও শিশুসহ ১৩ জন। এ নিয়ে গত ৩ মাসে শাহজাদপুরে মোট ৯১ জন ব্যক্তি এ অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হলো।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) উপজেলার চর কৈজুরী গ্রামে এ রোগ শনাক্ত হয়।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্যশিক্ষা অফিসার ইমান আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা কৈজুরী গ্রাম পরিদর্শন করেছেন।
আক্রান্তরা হলো- উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের চর কৈজুরী গ্রামের হাসি (৩), তামিম (৪), ইয়াছিন (৬), আঁখি (৭), নুপুর (৮), স্বপ্না (১০), আলামিন (১৩), তুর্য খাতুন (২৫), হাসনা খাতুন (৩৫), (পলাশ ২৫), শামীম (৩৫), মরিয়ম বেগম (৬৪) ও জামিলা বেওয়া (৬৩)।
শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস ও স্বাস্থ্যবিভাগ সূত্র জানায়, সোমবার( ৮ আগস্ট) চর কৈজুরী গ্রামের দেলেয়ার হোসেনের ছেলে নজরুল ইসলামের খামারের একটি ষাড় অসুস্থ হয়ে পড়ায় জবাই করে মাংস বিক্রি করেন। প্রায় ১০ দিন পর বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) মরিয়ম খাতুনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত করে স্বাস্থ্য বিভাগ। পরে ওই গ্রামে আরও ১২ জনের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে অ্যানথ্রাক্স দেখা যায়। আক্রান্তদের পোতাজিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পোতাজিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) ৮ জন রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ওষুধ দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা একটু খারাপ। তাদের হাসপাতালে আসার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়াও আরও তিনজনকে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাফরুল হোসেন জানান, আক্রান্তদের বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আলহাজ আব্দুস সামাদ জানান, ওই গ্রামে সময় মতোই অ্যানথ্রাক্স প্রতিষেধক টিকা দেওয়া হয়েছে। অসুস্থ গরুর মাংস বিক্রির অপরাধে গরুর মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে গত মে মাসে উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের চর কৈজুরী, পোরজনা ইউনিয়নের জামিরতা ও কায়েমপুর ইউনিয়নের সড়াতৈল গ্রামে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ পর্যাক্রমে ১৮ জন অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হন। এছাড়াও ওই সময় জেলার কামারখন্দ ও উল্লাপাড়া উপজেলাতেও অ্যানথ্রাক্সের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্বাস্থ্যশিক্ষা অফিসার ইমান আলী জানান, অসুস্থ গরু জবাই, মাংস কাটা এবং খাওয়া রোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা জার্নাল, আগস্ট ১৯, ২০১৬।