আন্তর্জাতিকসব সংবাদ

লিবিয়ায় ঐকমত্যের সরকার গঠনে চুক্তি

23লিবিয়ার পরস্পরবিরোধী দুটি পক্ষের মধ্যে ঐকমত্যের সরকার গঠনে একমত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতিসংঘরে মধ্যস্থতায় মরক্কোতে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বিরোধমান দুটি সংসদের প্রতিনিধিদের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

দেশটির এক সময়ের লৌহমানব মুয়াম্মার গাদ্দাফির ক্ষমতাচ্যুত এবং নিহত হওয়ার পর থেকে গত চার বছর ধরে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে সশস্ত্র যুদ্ধ লেগেই আছে। নানা জাতিতে বিভক্ত দেশটিতে গাদ্দাফির মৃত্যুর পর বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী গজিয়ে ওঠে। এই কয়েক বছরের গৃহযুদ্ধের কারণে এক সময়ের সমৃদ্ধ অর্থনীতির দেশ লিবিয়া ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে ঠেকেছে।

গৃহযুদ্ধ থেকে প্রাণে বাঁচতে ভূমধ্যসাগর পারি দিয়ে দেশটি থেকে অনেক নাগরিক ইটালি থেকে ইউরোপের অনেক দেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। সাগর পাড়ি দিতে অনেকে নৌকাডুবিতে প্রাণ হারিয়েছে।
গাদ্দাফির মৃত্যুর পর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক গোষ্ঠী আলাদা আলাদা সরকার গঠন করে। তাদের এই বিরোধের সুযোগ নিয়ে আরো কয়েকটি শক্তিশালী সশস্ত্র দল গজিয়ে ওঠে।

আজ বৃহস্পতিবার চুক্তি শুরুর আগে মরক্কোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালাহেদিন মেজুয়ার বলেছেন, ‘নতুন লিবিয়া গঠনে এটি কেবল শুরু মাত্র। আশা করছি এই চুক্তির মধ্য দিয়ে লিবিয়ার চলমান গৃহযুদ্ধের অবসান হবে।’
জাতিসংঘের কূটনীতিক মার্টিন কোবলার বৈঠক শুরুর আগে সকালে এক বিবৃতিতে বলেছেন, অনুষ্ঠানে লিবিয়ার দুটি সংসদের পক্ষ থেকে বিপুলসংখ্যক প্রতিনিধি এসে হাজির হয়েছেন। রয়েছেন উঁচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিরা। এদের মধ্যে রয়েছেন অনেক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও।
কোবলার বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে বিভাজন দূর করতে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে আসছিল জাতিসংঘ। এই অবস্থার অবসানে সব লিবীয় নাগরিককে সম্পৃক্ত করতে আমি কাজ করে যাব।’
লিবিয়ার সরকার পরিচালনা করছে বর্তমানে দুটি পক্ষ। তারা হলো, রাজধানী ত্রিপোলিভিত্তিক জেনারেল ন্যাশনাল কংগ্রেস এবং তবরুকভিত্তিক আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হাউজ অব রিপ্রেজেনটিটিভ। অনেক দিন থেকে একটি ঐকমত্যের সরকর গঠনে শান্তি আলোচনার কথা উঠলেও তা শেষ পর্যন্ত আর হয়ে উঠেনি। এখন দুটি পক্ষ একমত হয়ে একটি জাতীয় সরকার গঠন করলে দেশটির দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটবে এমনটাই আশা মধ্যস্থকারীদের।

তবে বিশ্লেষকরা বলেছেন, বিরোধমান দুটি সংসদের মধ্যে চুক্তি হলেও বেশ কয়েকটি শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী তা মেনে নিবে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। কারণ তাদের মতে এই চুক্তি হবে পক্ষপাতমূলক এবং তাদের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর।

তথ্যসূত্র : আল জাজিরা অনলাইন।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.