লিবার্টি গ্রুপের বিরুদ্ধে ১৩ কোটি টাকার দাবিনামা জারি
চট্টগ্রাম: শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানিকৃত কাঁচামালে তৈরি পণ্য খোলাবাজারে বিক্রির করে ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব উদ্ধারে মাঠে নেমেছে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট।
এরই মধ্যে বন্ড লাইসেন্স ব্যবহার করে ফাঁকি দেওয়া ১৩ কোটি ৫ লাখ ৮ হাজার ১১৫ টাকা আদায়ে ‘মেসার্স লিবার্টি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড’ ও ‘সানরাইজ অ্যাক্সেসরিজ লিমিটেড’র বিরুদ্ধে দাবি নামা জারি করেছে বন্ড কমিশনারেট।
দাবি নামাসহ বন্ড লাইসেন্স’র অপব্যাবহার করায় দুই প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন বন্ড কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম।
লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করায় দুই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা এবং লাইসেন্স বাতিল হবে না কেন জানতে চেয়ে একমাসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া ১৫ দিনের মধ্যে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বন্ড কমিশনার শফিকুল ইসলাম জানান, মেসার্স লিবার্টি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড’র বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৪ লাখ ১৬ হাজার ৫০০ এবং সানরাইজ অ্যাক্সেসরিজ লিমিটেড’র বিরুদ্ধে ১ কোটি ৯১ হাজার ৬১৫ টাকা আদায়ে দাবি নামা জারি করা হয়েছে।
১৫ দিনের মধ্যে সরকারি কোষাগারে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে এ টাকা জমা দিতে হবে। অন্যথায় কাস্টমস আইনে লাইসেন্স বাতিলসহ যে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বন্ড সুবিধায় কাঁচামাল আমদানি করে তৈরি করা পণ্য বাইরে বিক্রির দায়ে গত ২৩ নভেম্বর হাটহাজারী ফতেয়াবাদ এলাকার সানরাইজ অ্যাক্সেসরিজ লিমিটেড’র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত বিভাগ।
প্রতিষ্ঠানটি ৫৮০ টন ডুপ্লেক্স বোর্ড তৈরির কাঁচামাল আমদানি করে। কিন্তু তাদের গুদামে যে পরিমাণ পণ্য মজুদ থাকার কথা তা পাওয়া যায়নি। শুল্কমুক্ত সুবিধায় পণ্য এনে খোলাবাজারে বিক্রির প্রমাণ পায় শুল্ক গোয়েন্দা। লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
এদিকে সানরাইজ অ্যাক্সেসরিজ লিমিটেড’র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার একদিন পর (২৪ নভেম্বর) একই মালিকের অপর প্রতিষ্ঠান মেসার্স লিবার্টি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড’র বিরুদ্ধে ১২ কোটি ৪ লাখ ১৬ হাজার ৫০০ টাকা রাজস্ব ফাঁকির অপরাধে মামলা দায়ের করা হয়।
৪৬ কোটি টাকা মূল্যের ৩ হাজার ৫৬০ টন কাঁচামাল আমদানি করে খোলাবাজারে বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দেয় প্রতিষ্ঠানটি।
বন্ড কমিশনার জানান, বন্ড লাইসেন্স’র আওতায় আনা কাঁচামাল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবহার করে পণ্য উৎপাদন করতে হয়। ঘোষিত সময়ে পণ্য তৈরি করতে না পারলে আমাদের জানাতে হবে। এরপর ডিমান্ড জারি করে রাজস্ব আদায়ের পর এসব পণ্য বিক্রি করতে পারে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে কিছু প্রতিষ্ঠান আমাদের না জানিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা পণ্য বিক্রি করে দিচ্ছে।
এ ধরনের কয়েকটি ঘটনা ধরা পড়ার পর পর্যবেক্ষণ বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী লাইসেন্স বন্ধ করে দিতে পারি। কিন্তু হুট করেই কোন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা যায় না। কারণ এর সঙ্গে আরও অনেক কিছু জড়িত থাকে। তাই আমরা ভুল করলেও সমাধানের চেষ্টা করি।
ডিসেম্বর ০৮, ২০১৫