রাজিয়ার সঙ্গে লিভ টুগেদার করতাম: বৈরাগী
ঢাকা জার্নাল : ‘ফখরুল হাসান বৈরাগী নিখোঁজ’, এ সংবাদটি গণমাধ্যমকে প্রথম জানান রাজিয়া হাসান। তিনি নিজেকে জনপ্রিয় এ অভিনেতার স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন। ৪১ দিন ‘নিখোঁজ’ থাকার পর সোমবার ফখরুল হাসান বৈরাগী কলাবাগান থানায় এসে জানালেন, তিনি নিখোঁজ নন। এমনকি রাজিয়া হাসান তার স্ত্রীও নন। লিভ টুগেদার সম্পর্ক ছিল তার সঙ্গে। বৈধ কোনো স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ছিল না। বনিবনা না হওয়ায় কিছুদিন ধরে প্রথম স্ত্রীর ছেলের বাসায় থাকছেন।
এর আগে রাজিয়া হাসান গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, গত ৭ আগস্ট সকালে ছেলে সামন্ত হাসান ইসাকে কলেজে পৌঁছে দিয়ে বাসার দারোয়ানের কাছে গাড়ির চাবি রেখে বের হয়ে যান বৈরাগী। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ফখরুল হাসান বৈরাগী কোনো খোঁজ জানতেন না আত্মীয়-স্বজনরাও। ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে সিনিয়র এই অভিনেতাকে বাবা দাবি করে সামন্ত হাসান ইসা ‘নিখোঁজ’ ফখরুল হাসান বৈরাগীর সন্ধানও চেয়েছিলেন।
সোমবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে ফখরুল হাসান বৈরাগী বলেন, গত ৭ আগস্ট দারোয়ানকে বাসার চাবি দিয়ে এক কাপড়ে বেরিয়ে যাই। উঠি কেরানীগঞ্জের আঁটি বাজারে প্রথম স্ত্রীর ছেলের বাসায়।
তিনি আরও বলেন, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর রাজিয়া হাসানের সঙ্গে থাকতাম। সম্প্রতি বনিবনা হচ্ছিল না। সে কারণে অনেকটা অতিষ্ঠ হয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে যাই। ছেলে রাশেদুল হাসান ও রকিবুল হাসান একসঙ্গে থাকে। ওদের বাসায় গিয়ে উঠি। তার এক পালিত কন্যাও রয়েছে বলে জানান তিনি।
বৈরাগী বলেন, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি- আমি নাকি নিখোঁজ। আসলে আমি নিখোঁজ না। কেউ আমাকে অপহরণ করেনি। কিংবা আমি পালিয়ে থাকিনি। সজ্ঞানে ছেলের বাসায় গিয়ে উঠেছি।
তিনি বলেন, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর যার বাসায় ছিলাম, তার সঙ্গে বৈধ কোনো সম্পর্ক নেই। কাগজে কলমে স্ত্রীও নন। তবে তার সঙ্গে লিভ টুগেদারে ছিলাম। তবে বনিবনা না হওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলাম। সে কারণে আর থাকতে চাইনি। বিষয়টি ব্যক্তিগত, সম্মানহানি হতে পারে ভেবেই আমি বিয়ষটি কাউকে জানাইনি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া উপ কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদুর রহমান জানান, ফখরুল হাসান বৈরাগী আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন, তিনি নিখোঁজ ছিলেন না। সজ্ঞানে ছেলের বাসায় অবস্থান নিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে তিনি সাহায্য চাইলে আইনগত সহায়তা করা হবে।
রমনা বিভাগের উপ কমিশনার মো. মারুফ হোসেন সরদারজানান, অভিযোগ তদন্ত করা হবে। পরবর্তীতে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হবে। আদালত সিদ্ধান্ত নেবে। এর আগে থেকে বৈরাগীকে নিখোঁজ উল্লেখ করে সন্ধান চেয়ে তার ছেলে সামন্ত হাসান ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করেন।
এদিকে নাম প্রকাশে অনাগ্রহী ফখরুল হাসান বৈরাগীর ঘণিষ্ঠ এক আত্মীয় জানান, রাজিয়া হাসানকে আমরা বৈরাগীর দ্বিতীয় স্ত্রী বলেই জানি। ২৯ বছর ধরে তারা সংসার করছেন। তাদের সংসারে একপুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তাদের মধ্যে যে বৈধ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ছিল না, তা আগে আমাদের জানা ছিল না। তবে রাগের বশবর্তী হয়ে তিনি রাজিয়া হাসানকে অস্বীকার করতে পারেন।
এ বিষয়ে রাজিয়া হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ফখরুল হাসান বৈরাগী তাকে স্ত্রী হিসেবে অস্বীকার করছেন জেনে কলাবাগান থানায় তাকে অঝোরে কাঁদতে দেখা যায়।
ঢাকা জার্নাল, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৬।