রাজস্ব খাতে স্থানান্তর চায় মাউশির ১১৮৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী

অক্টোবর ১৭, ২০২৩

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদফতরের এক হাজার ১৮৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর না করে বঞ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (সেসিপ) কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ তোলেন থানা শিক্ষা অফিসারসহ সেসিপের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন এবং উন্নততর শিক্ষা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য সরকার ও এডিবি’র যৌথ অর্থায়নে ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ মেয়াদে প্রকল্প পরিচালিত হয়। ফলোআপ প্রজেক্ট হিসেবে ২০০৭ থেকে ২০১৪ মেয়াদে সফলভাবে এর বাস্তবায়ন হয়। পরবর্তীতে সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইডিপি) সকল কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় ২০১৪ থেকে সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেসিপ) বাস্তবায়িত হচ্ছে, যা ছয় বার মেয়াদ বেড়ে হয়েছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (সেসিপ) কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি বাড্ডা থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল হাকিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী নীতিগত অনুমোদন দেন ২০১৯ সালের ২৪ জুন। এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ৬ মে সর্বমোট ১ হাজার ১৮৭টি পদ জনবলসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরে সম্মতি দেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠালে অর্থ বিভাগের ব্যয় ব্যবস্থাপনা-৩ শাখা ২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এক হাজার ১৮৭টি পদ জনবলসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সম্মতি প্রদান না করে শুধু মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী ৮০১টি পদ সৃজনের সম্মতি দেয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের তোয়াক্কা না করেই। তাছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতির সঙ্গেও সংগতিপূর্ণ নয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২২ সালের ২০ জুন এক হাজার ১৮৭টি পদ জনবলসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের জন্য অর্থ বিভাগে পত্র দেয়। অর্থ বিভাগ ২০২২ সালে ২৮ জুন চারটি কারণ দেখিয়ে সেসিপের এক হাজার ১৮৭টি পদ জনবলসহ রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের সুযোগ নেই মর্মে অসম্মতি দেয়। যা প্রধানমন্ত্রীর সারসংক্ষেপ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতির সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ।

কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক শামীমা ফেরদৌসি বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ শেষে আগামী ১ জানুয়ারি সেসেপের জনবল ছাড়া মাঠ পর্যায়ে নানা সমস্যা সৃষ্টি হবে। চলমান নতুন শিক্ষা কারিকুলাম বাস্তবায়নের জন্য সেসিপে কর্মরত মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কারিকুলামের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ২০২৩-এর জানুয়ারি থেকে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। তাছাড়া শ্রেণি কার্যক্রম নিবিড়ভাবে শিখন-শেখানো কার্যক্রম, শিখনকালীন মূল্যায়ন ও সামষ্টিক মূল্যায়ন শিক্ষকদের নিকট সহজবোধ্য করে তুলছে। কারিকুলাম বিস্তরণ ও বাস্তবায়ন প্রশিক্ষিত এই জনবল ছাড়া বাধাগ্রস্ত হবে। এক কথায় মাধ্যমিক শিক্ষার মাঠ পর্যায় প্রায় অচল হয়ে পড়বে সেসিপের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া। অন্যদিকে আমাদের বঞ্চিত করা হবে অমানবিক কাজ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এসডিজি-৪ বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নে সেসিপের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কাজ করছে, যা আগামী জানুয়ারি থেকে বাধাগ্রস্ত হবে। সারা দেশে চলমান ৬৪০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভোকেশনাল কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও ৭১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন কার্যক্রম তত্ত্বাবধান মাঠ পর্যায়ে সেসিপের প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা ছাড়া সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা সম্ভব হবে না। অ্যাকাডেমিক সুপারভিশনে এমনিতেই জনবল কম, তারপর সেসিপের কর্মকর্তা-কর্মচারী না থাকলে পুরো শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে। অথচ অর্থবিভাগ হঠকারী ও সরকারের উদ্দেশ্যবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের বঞ্চিত করছে।