সংবাদ শিরোনামসব সংবাদ

রহস্য উন্মোচন, ‘বড় ভাইয়ের’ নির্দেশেই তাভেল্লা খুন

12ঢাকা: এক বড় ভাইয়ের নির্দেশে ইতালিয়ান নাগরিক তাভেল্লা সিজারকে  হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিট্রন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মহাপরিচালক মনিরুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।

তিনি জানান, আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে একজন কথিত ‘বড় ভাইয়ের’ নির্দেশে এ খুন করা হয়েছে এমন কথা স্বীকার করেছেন। তারা (আটককৃতরা) বড়ভাইয়ের নাম বলেছে।  এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত হওয়া গেছে। তদন্ত করে এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত হওয়া গেছে।

তিনি বলেন, ‘যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চান, যারা জানুয়ারিতে টানা ৯২ দিন অবরোধ দিয়েছে। কিছুদিন আগে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন তাদের এর সঙ্গে যোগসূত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা অনুমান নির্ভর হয়ে বলছি না। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুনিশ্চিত হয়েছি। এখন এই কথিত ‘বড় ভাইকে’ গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি। এই বড় ভাইকে গ্রেপ্তার করতে পারলে আরো ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে কারা আছেন তা জানা যাবে।’

এসময় তাভেল্লা হত্যাকাণ্ডে আইএসের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই দাবি করে র‌্যাবের মহাপরিচালক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সাইট (SITE) নামে একটা বিদেশি ওয়েবসাইট থেকে বারবার বলা হচ্ছে বিদেশি হত্যাকাণ্ডের জন্য আইএস দায়ী। কিন্তু আইএসের কোনো ওয়েবসাইটেই তাদের সংশ্লিষ্টতার খবর পাওয়া যায়নি। আমরা তাদের সব সাইট সার্চ করেছি। তাহলে আন্তর্জাতিকভাবে কে আইএসের সংশ্লিষ্ঠতা প্রমাণ করতে চাইছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এর আগে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের সন্দেহভাজন তিন খুনিসহ চারজনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। আটককৃতরা হলেন মো. রাসেল ওরফে ভাগনে রাসেল, মিনহাজ রাসেল ওরফে চাকতি রাসেল ও শ্যুটার রুবেল। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের চালক সাখাওয়াতকে আটক করেছে পুলিশ।

রোববার রাতে তাদের আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছে থাকা একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

টার্গেট ছিল যে কোনো ‘হোয়াই ফরেনার’:

তাভেল্লা সিজার নয়, যে কোনো একজন বিদেশিকে খুন করে দেশকে অস্থিতিশীল করাই খুনিদের উদ্দেশ্য ছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। আর এ খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বা মূল পরিকল্পনাকারী খুনিদের টাকার বিনিময়ে ভাড়া করেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘খুনিদের টার্গেট তাভেল্লা সিজার ছিলেন না। যে কোনো হোয়াইট বা ফরেনারকে হত্যা করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। আর এ নির্দেশ দিয়েছেন একজন কথিত ‘বড় ভাই’। নির্দিষ্ট টাকায় তারা ভাড়াটে হিসেবে খুন করেন। অর্ধেক টাকা তারা পেয়েছেন, বাকি অর্ধেক তারা পাননি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা এমন কথা স্বীকার করেছেন। তদন্ত করেও এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত হওয়া গেছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আমরা অনুমাননির্ভর হয়ে বলছি না। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুনিশ্চিত হয়েছি। এখন এই কথিত ‘বড় ভাইকে’ গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি। এই বড় ভাইকে গ্রেপ্তার করতে পারলে আরো ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে কারা আছেন তা জানা যাবে।’

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চান, কিছুদিন আগে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন তাদের এর সঙ্গে যোগসূত্র আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অকাট্য প্রমাণ, বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ না পেয়ে বলতে পারছি না। নিশ্চিত হয়েই রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততার কথা বলা হবে। তবে জানুয়ারি থেকে ৯২ দিন যারা অবরোধ ডেকে মানুষ হত্যা করেছিল, তারা জড়িত আছে বলে প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।’

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘আমরা যাদেরকে ধরেছি, তারা বলেছে কথিত ওই বড় ভাই নির্দেশ দিয়েছে একজন বিদেশিকে মারতে হবে। ওরা বলেছে কেন? সেই বড় ভাই বলেছে, সরকারকে চাপে রাখার জন্য যেকোনো বিদেশিকে হত্যা করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা কথিত ওই বড় ভাইকে গ্রেপ্তার করতে পারলে ঘটনার সব রহস্য উদঘাটন করতে পারব। আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। আমরা অবশ্যই এ রহস্যের উদঘাটন করব।’

কথিত বড় ভাইকে শনাক্ত করা গেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কথিত বড় ভাইকে শনাক্ত করতে পারিনি তা নয়, আমরা তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।’

আটককৃত চার জনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আমরা তাদের শনাক্ত করেছি। তারপর তাদের ধরেছি। তারা স্বীকারোক্তি দিয়েছে। জব্দকৃত মোটরসাইকেল মালিকও স্বীকারোক্তি দিয়েছে’।

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.