শিক্ষা-সংস্কৃতি

যৌন হয়রানি, প্রধান শিক্ষককে জুতা নিক্ষেপ

যৌন হয়রানির অভিযোগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ সময় শিক্ষক আলাউদ্দিনের দিকে জুতা নিক্ষেপ করে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে অভিভাবকরাও যুক্ত হন এ সময়।

রোববার (১ জানুয়ারি) নগরীর চকবাজার এলাকায় কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হাতে অবরুদ্ধ থাকেন প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন। সাড়ে ১২টার দিকে প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্ত শিক্ষককে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলে বিক্ষোভ স্থগিত করে ছাত্রীরা। পরে পুলিশের প্রহরায় আলাউদ্দিন বের হন পুলিশ প্রহরায়।

এর আগে ২০১৩ সালেও একই ধরনের অভিযোগে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল শিক্ষক আলাউদ্দীনকে। তবে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনের অভিযোগ, ভর্তি বাণিজ্য চালাতে না পেরে কিছু রাজনৈতিক লোক ও অভিভাবক তাকে অযথা হেনস্তা করেছে। তবে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক অভিযোগ ছিল। আর তার বিরুদ্ধে নানা ব্যবস্থাও নেয়া হয়। এবারও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জানিয়েছেন, এই শিক্ষককে আর স্কুলে আসতে দেয়া হবে না।

আলাউদ্দিন নানা সময় একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ তাদের। সিটি করপোরেশন পরিচালিত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও এই স্কুলে তা সংযোজন করতে দেননি তিনি।

দশম শ্রেণির ছাত্রী অভিযোগ করে জানায়, ‘অষ্টম ও ষষ্ঠ শ্রেণির দুজন ছাত্রীকে প্রকাশ্যে জড়িয়ে ধরেন তিনি। বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্রীদের স্পর্শকাতর অঙ্গ স্পর্শ করেন। বিভিন্ন ছাত্রীকে তার কক্ষে একা দেখা করতে বলেন। ছাত্রীরা সঙ্গে অন্য কোনো সহপাঠীকে নিয়ে গেলে, তিনি ওই ছাত্রীর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন ও পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়ার হুমকি দেন।’

উল্লেখ্য, ‘পুলিশ লাইনস স্কুল ও ছালেহজহুরে (ছালেহ জহুর সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়) থাকার সময়ও তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। ছাত্রী ও তার অভিভাবকের কাছে মাফ চেয়ে পার পান তিনি। পুলিশ লাইনস স্কুলে এই ধরনের অভিযোগ ওঠার পর এলাকাবাসী তাকে উত্তমমধ্যম দিয়েছিল।’

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর মোস্তফা টিনু বলেন, ‘আমি মেয়র মহোদয়কে জানিয়েছি। আমাদের শিক্ষা অফিসার লুৎফন নাহারের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে জানিয়ে দিতে বলেছেন যে অভিযুক্ত শিক্ষককে অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে। আগামীকাল থেকে তিনি আর স্কুলে যেতে পারবেন না।’