যে ৩ উপায়ে প্রতিটি মিটিংকে অর্থপূর্ণ করতেন স্টিভ জবস
এক পরিসংখ্যানে বলা হয়, ভুল মিটিংয়ের কারণে আমেরিকায় প্রতিবছর ৩৭ বিলিয়ন ডলার জলে যায়। কাজেই অফিসের মিটিং কার্যকর ও যুক্তিপূর্ণ হওয়াটা বাঞ্ছনীয়। এদের মধ্যে অ্যাপল তেমন প্রতিষ্ঠান নয়। এ ক্ষেত্রে গোটা কৃতিত্ব দেওয়া যায় স্টিভ জবসকে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ৩টি উয়ায়ে প্রতিটা মিটিংকে অর্থপূর্ণ করে তুলতেন স্টিভ। বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে তার সেই তিন পদ্ধতির কথা।
১. যতটা ছোট আকারের করা যায় : ‘ইনসেনলি সিম্পল’ বইয়ে জবসের বহু দিনের সঙ্গী কেন সিগাল লিখেছেন এ কথা। স্টিভ মিটিংকে যতটা সম্ভব ছোট পরিসরে করার চেষ্টা চালাতেন। এমনকি এ বিষয়ে বেশ নিষ্ঠুর ছিলেন তিনি। একবার অ্যাপলের বিজ্ঞাপন নিয়ে কাজ করে এমন একটা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিটিংয়ে বসলেন স্টিভ। সেখান লরি নামের অপরিচিত এক নারী আসলেন। জবস সরু চোখে তার দিকে তাকিয়ে পরিচয় জানতেই চাইলেন। লরি বললেন, আমাকে এখানে আমার প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো হয়েছে। তারা মনে করছে, সংশ্লিষ্ট কাজে আমাকে প্রয়োজন হবে। কিন্তু জবস তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্পষ্ট জানালেন, আগে যেহেতু প্রয়োজন হয়নি, এখনো হবে না।
২. উপস্থিতদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব থাকতে হবে : যে বিষয়ে মিটিং হবে এবং সেখানে যারা উপস্থিত হবেন, ওই বিষয়ের সঙ্গে প্রত্যেকেরই সংশ্লিষ্টতা থাকতে হবে। নয়তো ওই মিটিংয়ে তিনি প্রয়োজনীয়। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে নীতিমালা গ্রহণ করেন জবস। তার নাম দেন ডিআরআই যার অর্থ ডিরেক্টলি রেসপন্সেবল ইনডিভিজ্যুয়াল। মিটিংয়ের এজেন্ডার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত এমন মানুষরাই সভায় আসতে পারেন। অন্য কেউ নয়। অ্যাপলে যেকোনো মিটিংয়ে ‘ডিআরআই’ একটা প্রচলিত শব্দ হয়ে দাঁড়ায়। স্টিভ জিজ্ঞাসা করতেন, এ মিটিংয়ে ডিআরআই কে কে? এ পদ্ধতিতেই আইপড টিম থেকে গ্লোরিয়া লিনকে ফ্লিপবোর্ডে নেওয়া হয়। কারণ তিনি ফ্লিপবোর্ডের ডিআরআই। বড় মাপের প্রতিষ্ঠানের হাজারো কাজকে সুষ্ঠুভাবে ভাগ করে দিতে এটি জবসের এক অনন্য পদ্ধতি।
৩. প্রেজেন্টেশন নিয়ে ব্যস্ততা থাকবে না : ‘স্টিভ জবস’ বায়োগ্রাফিতে ওয়াল্টার আইজ্যাকসন লিখেছেন, অফিসিয়াল প্রেজেন্টেশনকে রীতিমতো ঘৃণা করতেন জবস। প্রতি বুধবার দুপুরে মার্কেটিং এবং বিজ্ঞাপন বিভাগের সঙ্গে এজেন্ডা বিহীন মিটিং করতেন জবস। সেখানে স্লাইড শো নিষিদ্ধ ছিল। সেখানে কেউ প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে পরিকল্পনার কথা তুলে ধরতেন না। সবাই যার যার কল্পনাপ্রসূত পরিকল্পনার কথা আবেগের সঙ্গে তুলে ধরতেন। জবস একবার আইজ্যাককে বলেছিলেন, চিন্তার বদলে স্লাইডের মাধ্যমে মানুষ যেভাবে প্রেজেন্টেশন করেন তা ঘৃণা করি আমি। এর মাধ্যমে মানুষ তার কাজ ও চিন্তার সঙ্গে একাত্মতা আনতে পারে না। তাই চিন্তা এবং তা প্রকাশের মাধ্যমেই সর্বোৎকৃষ্ট প্রেজেন্টেশন তৈরি করা যায়।