‘মৃত্ মানুষের সংখ্যা নিয়ে অপপ্রচার ভিত্তিহীন’
ঢাকা জার্নাল: ডিএমপি কমিশনার বেনজির আহমেদ দাবি করেছেন, হেফাজতে ইসলামীকে হঠাতে কোনো রকম প্রাণনাশক অস্ত্র বা আগ্নেয়াস্ত্র অপারেশনে ব্যবহার করা হয়নি বলে ।
বুধবার দুপুরে ডিএমপি কার্যালয়ের মিডিয়া সেলে অনুষ্ঠিত ৫ মে এর অপরাশেন সম্পর্কে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানানোর জন্য এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে তিনি এ দাবি করেন।
৫ মে রাতে হেফাজতের কর্মীদের ওপর চালানো অপারেশন নিয়ে জনমনে যে মিথ্যা ও ভ্রান্ত ধারণা ছড়ানো হচ্ছে তা দূর করার জন্য এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় কমিশনার বেনজির বলেন, ‘৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি চলাকালীন হেফাজতেরকর্মীরা নির্বিচারে গাছ কেটেছে, ব্যাংক ভাঙচুর ও লুপাটের চেষ্টা করেছে, এটিএম বুথ ভেঙেছে, পুলিশ বক্স পুড়িয়ে দিয়েছে, বাইতুল মোকারমের একাংশে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে, জুয়েলারির দোকানে ভাঙচুর করেছে, ফুটপাতের দোকানগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, তারা পুলিশকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। পু্লিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। সাধারণ মানুষের সম্পদ বিনষ্ট করেছে। বিভিন্ন স্থানে লাগানো পুলিশের ৯৬টি ক্যামেরায় ভাঙচুর করেছে। সন্ধ্যার পর পাল্টনে ও আশপাশের এলাকায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে যুদ্ধ বিধ্বস্ত এলাকায় পরিণত করেছে। গাড়িতে আগুন দিয়েছে। তাদের হামলায় আমাদের পুলিশের কনস্টেবল, ইন্সপেক্টর গুরুতর আহত হয়। এমনকি পুলিশের অফিসে তালা দিয়ে পুলিশকে জীবন্তদগ্ধ করে মারার চেষ্টা করা হয়েছে। এ সময় একজন পুলিশ অগ্নিদগ্ধ হন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর আসে হেফাজতের কর্মীরা বাংলাদেশ ব্যাংকে হামলা চালাবে, সচিবালয়ে হামলা চালাবে, মানুষের জানমালের ক্ষতি করবে। আমরা তাদের বারবার স্থান ত্যাগ করার নির্দেশ দিলেও তারা তা শোনেননি, তারা সেখানে অবস্থান করেছেন। এরকম অবস্থায় আমরা অপারেশনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই।
রাত ২টার পর আমরা অপারেশনে নামি। আমাদের অপারেশন সরাসরি মিডিয়ার সামনে হয়েছে। ২টি টিভি চ্যানেল সরাসরি অপারেশ সম্প্রচার করেছে। ক্যামেরার চোখকে ফাঁকি দেয়া কঠিন। তাই অপারেশনে যা হয়েছে সব আপনারা দেখেছেন। টিভির মাধ্যমে দেশের মানুষ দেখেছে। আমাদের অপারেশনে ছিল অফিসার্স বেজ। অফিসার লেভেলের সবাই এই অপারেশনে অংশ নিয়েছে। র্যাবের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা এতে অংশ নিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অপারেশনে ওয়াটার প্যালেস, সাউন্ড গ্রেনেড, গ্যাস গ্রেনেড, স্মোক গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ব্যবহার করেছি। এ ধরনের জিনিস প্রাণনাশক নয়। আধুনিক দেশে এ ধরনের পরিস্থিতিতে অপারেশনে এ সমস্ত জিনিসই ব্যবহার করা হয়।’
নিহতের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘অপারেশনের সময় আমরা মঞ্চের ওপর সাদা কাপড় ও পলিথিনে মোড়ানো ৪টি লাশ পেয়েছি এবং অপারেশন চলাকালে বিভিন্ন স্থান থেকে আরও ৩টি লাশ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমরা সর্বমোট ১১টি লাশ উদ্ধার করেছি। এর মধ্যে আমাদের পুলিশের লোকও ছিল। তাই যারা বলছেন, ২ হাজার, ৩ হাজার কিংবা ৮ হাজার লাশ দেখতে পেয়েছেন, তারা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট কথা বলছেন। এসব কথার কোনো ভিত্তি নেই। কম্পিউটার ফটোশপের মাধ্যমে অনেকেই এসব মিথ্যা অপপ্রচার ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। আমি অনুরোধ করবো, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে এ ধরনের মিথ্যা কথা বলে মানুষকে যেন বিভ্রান্ত না করা হয়।’