মিশরে মাসব্যাপী জরুরী অবস্থা জারি
ঢাকা জার্নাল :মিশরে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোরসির সমর্থকদের সাথে নিরাপত্তাবাহিনীর রক্তাক্ত সংঘাতের পর রাজধানী কায়রোসহ অন্যান্য শহরে কার্ফিউ জারি করা হয়েছে।
কায়রোসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘের্ষে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা নিয়ে বড় ধরনের তারতম্য দেখা দিয়েছে।
মি. মোরসির নেতৃত্বাধীন দল মুসলিম ব্রাদারহুড বলছে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দু’হাজারেও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
তবে পূর্ব কায়রোর রাবা আল-আদাউইয়া মসজিদের বাইরে যেখানে ব্রাদারহুড সমর্থকরা অবস্থান নিয়ে ছিলেন তার কাছাকাছি দুটি অস্থায়ী হাসপাতালে উপস্থিত বিবিসির একজন সংবাদদাতা বলছেন, তিনি নিজে অন্তত ৫০টি মৃতদেহ গুণে দেখেছেন।
মিশরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কায়রোসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় নিহতের সংখ্যা ১৪৯ বলে দাবি করেছে।
তারা বলছে আহত হয়েছে ১৪০৩ জন।
কায়রোর রাবা আল-আদাউইয়া মসজিদ এলাকাটি নিরাপত্তা বাহিনী ঘিরে রেখেছে। আশেপাশের সড়কগুলিতে মোরসি-সমর্থকদের সাথে খন্ড খন্ড সংঘর্ষ চলছে।
সেখান থেকে উপস্থিত বিবিসির একজন সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা বাহিনীর দিকে ঢিল ছুঁড়ছে। তবে নিরাপত্তা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে টিয়ার গ্যাসের পাশাপাশি তাজা বুলেট ব্যবহার করছে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, শহরের আল-নাহ্দা স্কয়ার থেকে ব্রাদারহুড সমর্থকদের তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
ওদিকে এই অভিযান শুরু হওয়ার পর মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থকদের আবারও রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছে এবং পুলিশ এ ধরনের একটি গ্রুপকে হঠিয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে কায়রোর পশ্চিমে একটি মসজিদের বাইরে হাজার হাজার লোক জড়ো হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এখানে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
কায়রোর দক্ষিণে ফাইয়ুম নামক স্থানে দুটি গীর্জায় হামলা হয়েছে।
বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে বাইরে
মুসলিম ব্রাদারহুডের বিক্ষোভ কায়রোর সীমানা ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে।
মিশরের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেকজান্দ্রিয়ায় মোরসি-সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করেছেন। বেশ কিছু সড়ক বন্ধ হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আসওয়ানে শহরে শত শত বিক্ষোভকারী স্থানীয় গভর্নরের অফিসের সামনে জড়ো হয়েছেন।
গিজা, আসিউত এবং মিনিয়া শহর থেকেও নিরাপত্তা বাহিনীর এবং ব্রাদারহুড সমর্থকদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
অভিযানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিন্দা
কায়রোর ঘটনাবলীকে আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দা জানানো অব্যাহত রয়েছে।
তুরস্ক এটিকে হত্যাযজ্ঞ হিসেবে অভিহিত করে বলেছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।
আর ইরান সতর্ক করে দিয়েছে যে মিশরে গৃহযুদ্ধ শুরুর ক্রমবর্ধমান আশংকা দেখা দিয়েছে।
কাতার মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থকদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার নিন্দা করেছে।
ইওরোপীয় ইউনিয়ন মিশর কর্তৃপক্ষের প্রতি সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।