মিতু হত্যার নির্দেশদাতাকে গ্রেপ্তারে বিশেষ অভিযান
ঢাকা জার্নাল : পুলিশের সর্বশেষ তদন্তের তথ্য এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের স্বীকারোক্তি মতে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার নির্দেশদাতা কামরুল সিকদার প্রকাশ আবু মুছা। পুলিশ বলছে, মুছাকে গ্রেপ্তার করতে সারা দেশব্যাপী বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে।
মুছাসহ এই হত্যা মামলার আসামিরা যাতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারে সে ব্যাপারে দেশের সকল বিমানবন্দর এবং স্থল সীমান্তএলাকায় সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। এখনো গ্রেপ্তার এড়িয়ে পালিয়ে থাকা আসামিরা হলো- আবু মুছা, মোহাম্মদ রাশেদ ও কালু শাহজাহান।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাশ ভট্টাচার্য্য জানান, যেসব আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা হত্যার নির্দেশদাতা ও তার সহযোগীদের নাম জানিয়েছে। স্বীকারোক্তিতে তারা বলেছে, এই হত্যা করার জন্য ভাড়াটে খুনিদের সঙ্গে চুক্তি করেছেন মুছা।
দেবদাশ ভট্টাচার্য্য জানান, মিতু হত্যার সঙ্গে জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আসামিরা যাতে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারে সে জন্য তাদের ছবিসহ সতর্কবার্তা দেশের সকল বিমানবন্দর, স্থল বন্দর ও নৌ-বন্দরসমূহে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মুছা এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছেন। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের ঠাণ্ডাছড়ি গ্রামে মুছার স্থায়ী নিবাস। তবে সে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর চাঁন্দগাঁও থানার বহদ্দার হাট এলাকায় বাস করে আসছিলো। মিতু হত্যার পর থেকেই মুছার চট্টগ্রাম নগরীর বাসা তালাবদ্ধ রয়েছে। গ্রামের বাড়িতেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
ঠাণ্ডাছড়ি এলাকার বাসিন্দারা জানান, মুছা এলাকার একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং খুন, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির কয়েকটি মামলার আসামি। এক সময় সে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাকা চৌধুরীর ক্যাডার হিসেবে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে ছিলো। সাকা চৌধুরীর পতনের পর মুছা চট্টগ্রাম নগরীতে অবস্থান করে নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। সে এসপি বাবুল আক্তারের একজন বিশ্বস্ত সোর্স হিসেবেও কাজ করছিলো বলে পুলিশের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার ও মিতু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘মিতু হত্যার নির্দেশদাতা মুছাকে গ্রেপ্তার করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মুছা ও অন্য পলাতক আসামিরা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে সে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মুছাসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হবো।’
উল্লেখ্য, মিতু হত্যায় মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ওয়াসিম ও আনোয়ার নামে দুজন ইতিমধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।
ঢাকা জার্নাল, জুন ২৯, ২০১৬।