মঙ্গল আলোয় উদ্ভাসিত ‘বাংলাদেশি’ ছিটমহলবাসী
ঢাকা জার্নাল: দাসিয়ার ছড়া (ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম থেকে): ‘অন্ধকার’ থেকে ‘আলোয়’। ৬৮ বছর তাদের কাছে ছিল ‘অন্ধকার’। শুক্রবার (৩১ আগস্ট) দিনগত রাত ১২টা ০১ মিনিটে লাখো মঙ্গল প্রদীপের আলোয় দূর হলো সেই অন্ধকার, এলো উদ্ভাসিত আলোর যুগ।
অশূচি, অমঙ্গল দূর হয়ে যাক এ আলোয়, বাংলাদেশি হয়ে নতুন জীবন হোক আলোকিত।
এই কামনা নিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে থাকা ভারতের ১১১টি ছিটমহলের ৪১ হাজার ৪শ’ ৪৯ হাজার বাসিন্দা পেলেন নিজস্ব পরিচয়। তারা এখন বাংলাদেশি। বাংলাদেশ তাদের দেশ। আজকের পর থেকে কেউ তাদের আর বলবে না ছিটমহলবাসী। পরিচয় গোপন করে তাদের ঢুকতে হবে না বাংলাদেশে। কেউ বাধা দেবে না তাদের পড়াশোনায়। কোনো শিশুকে আর মিথ্যা মাথায় নিয়ে হবে না জন্মাতে। তারা এখন স্বাধীন দেশের নাগরিক। বাংলাদেশ পেলো ভূমিসম্পদ, বাড়লো আয়তন, সঙ্গে জনসম্পদও।
সাধারণ মানুষের কাছে এই আলো জ্বালানোর কারণ জানতে চাইলে বলেন, আমরা চাই অমঙ্গল দূর হয়ে যাক। সব হোক কলঙ্কমুক্ত। বাংলাদেশি হিসেবে আমাদের সামনের চলার পথ হোক আলোর মতো উজ্জ্বল। আমরা শিক্ষা-দীক্ষায় আলোকিত হয়ে দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে চাই, অবদান রাখতে চাই।
সুবিধাবঞ্চিত এই মানুষগুলো যে এভাবে ভাবতে পারে এটা নিজের কানে না শুনলে বিশ্বাস করা কঠিন। তাদের বুকের চাপানো কষ্ট বলার সুযোগ যেন আজ উন্মোচিত।
দিনের প্রথম প্রহরে তাদের মাটিতে প্রথমবারের মতো উঠবে রক্ত-সংগ্রামের রং লাল আর সজীব প্রাণের রং সবুজের মিশেলে বাংলাদেশের পতাকা। মিলবে মুক্তির স্বাদ, ওড়ার আনন্দ। আর কখনো তাদের ভাবতে হবে না ভারতের কুচবিহার না বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম। এ তালিকায় আছে লালমনিরহাট, পঞ্চগড়ও। এখন এসব অঞ্চলের মানুষ শুধুই বাংলাদেশি।
ঢাকা জার্নাল, আগস্ট ০১, ২০১৫