Leadসব সংবাদ

ভিক্ষা করে জমানো টাকা দান করে দেওয়া নাজিমুদ্দিনকে নতুন ঘর দেবেন প্রধানমন্ত্রী

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঘরবন্দি কর্মহীন মানুষের সহায়তায় গঠিত ইউএনও’র ত্রাণ তহবিলে দুই বছর ধরে জমানো নগদ ১০ হাজার টাকা অনুদান দিয়ে এখন আলোচনায় শেরপুরের ঝিনাইগাতীর ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিন (৮০)। অনুদান দেওয়া ভিক্ষুক নাজিমুদ্দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সরকারি জমিতে একটি পাকা ঘর, জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে একটি দোকান ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার ও পরিবারের ভরণপোষণ ও চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে নাজিমুদ্দিনকে সংবর্ধনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ সময় জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে উত্তরীয় পরিয়ে দেন এবং নগদ ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এর আগে ঝিনাইগাতীর ইউএনও রুবেল মাহমুদ নিজ গাড়িতে করে পাশে বসিয়ে তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।

জেলা প্রশাসক জানান, ‘নাজিমুদ্দিনের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে তাকে জমিসহ ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। কর্মসংস্থানের জন্য একটি দোকান করে দেওয়াসহ তাকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন হতাশ হয়ে যাই, তখনই এ ধরনের লোকগুলো আমাদের সাহস দেন।’

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নাজিমুদ্দিন বলেন, ‘কোনও কিছু পাওয়ার আশায় আমি দান করিনি। আমার মনে হয়েছে, দেশের মানুষের এখন খুব বিপদ। আমার ঘর পরে হলেও চলবে। তাই আমি আমার জমানো সব টাকা ইউএনও’র তহবিলে দিয়েছি। আমি এতে খুব তৃপ্ত।’
ইউএনও’র হাতে টাকা অনুদান তুলে দেন নাজিমুদ্দিন

নাজিমুদ্দিন জানান, তার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। ভিক্ষা করে সংসার চালিয়ে দুই বছরে তিনি ১০ হাজার টাকা জমান। ঘর মেরামতের জন্য এই টাকা জমিয়ে ছিলেন তিনি। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আজ যেভাবে আমাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে এজন্য আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও জেলা প্রশাসকের প্রতি খুব খুশি।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এহছানুল হক মামুন, ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ, শেরপুর প্রেস ক্লাব সভাপতি শরিফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. মেরাজ উদ্দিন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাবিহা জামান শাপলা প্রমুখ।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধিগাঁও গ্রামের মৃত ইয়ার আলীর ছেলে নাজিমুদ্দিন তার জমানো ১০ হাজার টাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদের হাতে তুলে দেন। পরে বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব কথা বলেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক ও ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এ সময় তিনি নাজিমুদ্দিনকে ঘর তৈরি করে দেওয়াসহ সার্বিক সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন।