শিক্ষা-সংস্কৃতি

ভিকারুননিসায় ১৬৯ ছাত্রীর ‘অবৈধ ভর্তি’র বিষয়ে তদন্ত করবে মাউশি

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম শ্রেণির ১৬৯ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আদালতের নির্দেশনার আলোকে ভর্তি বাতিলের এই নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি কী কারণে নিয়ম না মেনে এসব ছাত্রী ভর্তি করানো হলো, তা তদন্ত করবে অধিদফতর।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ১৬৯ জনকে ভর্তির বিষয়ে শর্ত অমান্য করেছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির বয়সের ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করে আবার তা অনুসরণ না করে ১৬৯ জনকে ভর্তি নেওয়া হয়।

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ  বলেন, ‘বয়সের নিম্নসীমা (৬+) ভর্তি নীতিমালায় উল্লেখ করা আছে। আর বয়সের উচ্চসীমা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারণ করতে বলা আছে। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ নিজেরাই বয়সের ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ করে তা নিজেরাই মানেনি। আদালত বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বলেছে। সে কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ভর্তি বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের কোনও অপরাধ নেই। সে ক্ষেত্রে ভর্তির সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করবো। তারপর কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা বিবেচনা করা হবে। তবে শিক্ষার্থীদের কোনও দোষ নেই।’

এর আগে ২০১৯ সালে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ৪৪৩ জন অতিরিক্ত ছাত্রীর ভর্তি নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সমালোচনার মুখে পড়ে। ওই সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে কেকা রায় চৌধুরী দায়িত্বে থাকাকালে ৬ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারি প্রথম শ্রেণিতে ১৬২ জনকে ভর্তি করানো হয়। আর পরবর্তী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে হাসিনা বেগম দায়িত্বে থাকাকালে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তি করা হয় ২৮১ জন। এই দুই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষেরই ভর্তি ফরমে সই ছিল না। অভিযোগ ছিল, গভর্নিং বডি অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করায়। অতিরিক্ত ছাত্রী ভর্তির বিরোধিতা করলে ওই সময়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাসিনা বেগমের বিরদ্ধে গভর্নিং বডি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে অভিযোগ তোলে। ফলে হাসিনা বেগমের এমপিও বন্ধ করে দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। কিন্তু কোনও শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়নি। আর কোকা রায়ের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে কেকা রায় চৌধুরী বলেন, ‘মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি।’