শিক্ষা-সংস্কৃতি

ভিকারুননিসায় আবারও শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ

২০২৪ শিক্ষাবর্ষে সরকারি নীতিমালা অমান্য করে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী অভিভাবকরা। তারা বলছেন, যেসব শিক্ষার্থীরা মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভর্তির আবেদন করেছেন তাদের ভর্তি চূড়ান্ত করেছে গভর্নিং বডি। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর এই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী অভিভাবকরা।

অভিভাবক পারভীন আক্তার ও মো. আলাউদ্দিন লিখিত অভিযোগে বলেন, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ২০২৪ সালে প্রথম শ্রেণিতে সরকারি নীতিমালা অনুসরণ না করে যে সকল শিক্ষার্থীকে লটারিতে উত্তীর্ণ করা হয়েছে তাদের ফলাফল বাতিল করতে হবে।

অন্যদিকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য গোলাম বেনজীর শিক্ষার্থী ভর্তিতে বয়সের সময়সীমা নির্ধারণ করার জন্য অধ্যক্ষকে পত্র দিয়েছেন। গত ২ ডিসেম্বরের পত্রে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে জন্মগ্রহণ করা শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আমি মনে করি, এ স্পর্শকাতর বিষয়টি সম্পূর্ণ বেআইনি ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার শামিল। নিয়মভঙ্গ করে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে জন্ম নেওয়া শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলে অপেক্ষমাণ তালিকার শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হবে।

বিগত বছরগুলোতেও আসনের অতিরিক্ত ভর্তি ও ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে একাধিক অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। ২০১৯ সালে এই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ১৬২ জন শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ভর্তির অভিযোগ ছিল।

গত ১২ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের সচিবের কাছে করা দুই অভিভাবকের অভিযোগে আরও জানানো হয়, ২০২৪ সালের ভর্তির নীতিমালা, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ অনুযায়ী প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীর বয়স ৬ প্লাস বছর হতে হবে, যা বেসরকারি স্কুল কলেজে মাধ্যমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও সংযুক্ত প্রাথমিক স্তর শিক্ষার্থীর ভর্তির নীতিমালায় উল্লেখ আছে। এছাড়া সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বেসরকারি মাধ্যমিক-১ শাখা এসংক্রান্ত পরিপত্র জারি করেছে।

অথচ ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে যারা জন্ম নিবন্ধন ও একাধিক কোটা আবেদন করেছেন তাদেরকে লটারিতে উত্তীর্ণ করে ইতোমধ্যে ভর্তির জন্য নির্বাচিত করেছে। এ সকল শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৫০ জন।

শিক্ষার্থীর ভর্তির নীতিমালা ধারা ৩.০ ও ধারা ৪.০ অনুসরণযোগ্য এবং ভর্তি নিয়ে কোনও জটিলতা দেখা দিলে ধারা ২৪.০ অনুযায়ী তা দূর করতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক নিষ্পত্তি করতে হবে মর্মে গত ২৩ অক্টোবরের পরিপত্রে বলা আছে। অথচ স্কুলের গভর্নিং বডি বিষয়টিকে অমান্য করে অনৈতিকভাবে যারা বিভিন্নভাবে ভুল তথ্য দিয়ে লটারিতে অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের ভর্তির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় বলেন, সব কিছু মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদফতরকে জানিয়ে করা হচ্ছে। কোনও অনিয়ম হচ্ছে না।