আমার দেশে ব্লগ পোষ্ট প্রকাশ, ব্যাখ্যা চাইবে সরকার
ঢাকা জার্নাল: মহানবী সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যকারী ব্লগাদের খূঁজে বের করতে তথ্য কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। পাশপাশি ব্লগ সাইট পরিচালনাকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে মহানবীকে নিয়ে ব্লগের আপত্তিকর মন্তব্য প্রকাশ করার বিষয় জানতে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার কাছে ব্যাখ্যা চাওয়ার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে সরকার।
এদু’টি ক্ষেত্রেই সরকার জিরো টলারেন্স দেখাতে অবস্থান সূদৃঢ় রাখবে। এ ক্ষেত্রে সরকার কোন দুর্বলতা অনুভব করে না।
মহানবী সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যকারী ও ইসলাম অবমানকারীদের খূঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রীর গঠিত কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়ে এসব তথ্য জানানো হয়।
বুধবার সচিবালয়ে কমিটির সভাপতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাইনউদ্দিন খন্দকারের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় মাইনুদ্দিন খন্দকার জানান, বুধবার থেকেইদুই ধরণের অভিযোগ কেন্দ্র বা তথ্য কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। অনলাইনে এবং সরাসরি ব্যক্তি পর্যায়ে অভিযোগ করার ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অভিযোগ কেন্দ্র বা তথ্য কেন্দ্র চালু করা হবে।
কমিটির কর্মপরিধি উল্লেখ করে কমিটির সভাপতি জানান, কমিটি ৯টি কর্মকৌশল নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে পত্রিকার কার্টিং, ব্লগার অন্বেষণ, তদন্ত প্রধান হিসেবে ওয়েবসাইট খোলা, অভিযোগকারীদের অন্বেষণ ও আহবান, ব্লগারদের সঙ্গে কথা আলোচনা, আইটি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা, ইসলামী চিন্তাবিদদের সঙ্গে আলোচনা, এক জনের নামে অন্য জনের ব্লগিং সম্ভবনা বিশ্লেষণ, গণজাগরণ মঞ্চের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা এবং সাইবার ক্রাইম-অপারেশন-আইন নিয়ে আলোচনা।
বুধবার ক্রাইম-অপারেশন-আইন নিয়ে আলোচনা করা হয়। আগামী ৩১ মার্চ ইসলামী চিন্তাবিদদের নিয়ে আলোচনা করবে এই কমিটি। এরপর ব্লগ সাইট পরিচালনাকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে কমিটি।
আইনী ব্যবস্থার বিষয়ে কমিটির সভাপতি জানান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬, সন্ত্রাস বিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
সভায় আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবু আহমেদ জমাদার বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদ- এবং এক কোটি টাকা অর্থ দ-ের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া সন্ত্রাস দমন আইনে মৃত্যুদ-ের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া সাইবার ক্রাইম, ও বিশেষ ক্ষমতা আইন রয়েছে। সর্বপরি সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংস্কৃতিতে আঘাত হানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সঙযোগ রয়েছে।
কমিটির সদস্য তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তফা জব্বার সভায় বলেন, “এসব ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে পারছে না কমিটি। সরকার এ ক্ষেত্রে ক্যাপবল কী না, বুঝতে পারছিনা। আইনী ব্যবস্থা আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই।”
মোস্তফা জব্বার জানান, ফেসবুক, টুইটার বা ব্লগে পোষ্টকারীদের ব্যাক্তি পর্যায়ে পরিচয় নিশ্চিত করার প্রয়োজন হয়না। তবে উৎস খূজে বের করে সন্ধান নেওয়া যায়। প্রতিকারের ব্যবস্থা আছে।
সরকারের দুর্বলতার উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ব্লগ বা নিউজ পোর্টাল’র জন্য কোন নীতিমালা নেই। তবে প্রতিকার জন্য ১৯৭৩ সালের ছাপখানা আইন রয়েছে। যাদের রয়েছে দায়বদ্ধতা। ব্লগে লেখার দায়িত্ব লেখকের ব্যাক্তিগত হলেও প্রকাশকের দায়িত্ব সামগ্রিক।”
তিনি বলেন, “ব্লগ পরিচালনাকারীদের খতিয়ান নেওয়া উচিত এবং কাগজের পত্রিকায় যারা ছেপেছেন তাদের প্রকাশনা বাতিল করা উচিত।”
কমিটির সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদফতরের পরিচালক কর্নেল সাইদুর রহমান খান, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা পরিচালক কর্নেল আবু হেনা, বুয়েটের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম ও ড. হাফিজ মোহাম্মদ হাসান বাবু। এছাড়া বিটিআরসি’র প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বিভাগ ও পুলিশের বিশেষ বিভাগের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা জার্নাল, মার্চ ২৭, ২০১৩