শিক্ষা-সংস্কৃতি

বেতনস্কেল ২য় শ্রেণিতে উন্নীত করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান প্রধান শিক্ষকরা  

Head Masterঢাকা জার্নাল: প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যদা বাস্তবায়ন গড়িমসির অভিযোগ তুলেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা। আর তাদের বেতনস্কেল দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

আগামী ৬ আগস্ট এই দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে।

গত ৩১ জুলাই জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পধান শিক্ষক সমিতি কর্মসূচি ঘোষণা করে।

কর্মসূচিতে আগামী ৬ আগস্ট দেশের সকল জেলায় একযোগে জেলা প্রশাসকগণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।

প্রধান শিক্ষকদের দাবি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যদা বাস্তবায়ন না করার পরেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর জরুরী হস্তক্ষেপ ও সুদৃষ্টি কামনা করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষকরা।

ওইদিন সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক রিয়াজ পারভেজ। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নজরুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক আলাউদ্দিন মোল্লা, নূরে আলম সিদ্দিকী, মিজানুর রহমান মিজান, খায়রুল ইসলাম, এস এম ছায়িদ উল্লা প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও বিভিন্ন জেলা, বিভাগীয় ও মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দসহ সারাদেশ থেকে প্রধান শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত বছর ৯ মার্চ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এক যুগান্তকারী ঘোষণার মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদায় উন্নীত করা হয়। একই সঙ্গে বেতন স্কেলও উন্নীত ঘোষণা দেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা ও বেতন স্কেল গত দেড় বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। প্রধান শিক্ষকদের পদমর্যাদা বাস্তবায়ন নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গড়িমসি শুরু করেছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে প্রধান শিক্ষকদের নামীয় (ইু হধসব) গেজেট প্রকাশ না করা এবং ১ম/২য়/৩য় টাইম-স্কেলপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের করেসপন্ডিং স্কেলে বেতন নির্ধারণের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনা জারি না হওয়ায় বেতন নির্ধারণ করতে পারছে না হিসাবরক্ষণ অফিস। যার ফলে এখনও তৃতীয় শ্র্রেণির কর্মচারীদের বেতন বিলের মাধ্যমে ও কোড ৪৬০১ হতে আগের মতোই পুরোনো স্কেলে বেতন-ভাতা পাচ্ছে প্রধান শিক্ষকরা।

অথচ আমরা দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে গেজেটেড সরকারি কর্মকর্তার বেতন বিলের মাধ্যমে ও কোড ৪৫০১ হতে বেতন-ভাতা পাবার কথা। দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা অনুযায়ী বেতন স্কেলও পাইনি প্রধান শিক্ষকরা। অর্থ মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষকদের জন্য নিম্ন গ্রেডে বেতন স্কেল নির্ধারণ করে বৈষম্য করেছে। প্রশিক্ষণবিহীন প্রধান শিক্ষকদের জন্য জাতীয় বেতন স্কেল ২০০৯ এর দ্বাদশ গ্রেডে ৫,৯০০/- টাকার স্কেল ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের জন্য একাদশ গ্রেডে ৬,৪০০/- টাকার স্কেল। অর্থাৎ প্রথম নিয়োগের সময় একজন প্রশিক্ষণবিহীন প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল হবে ৫,৯০০/- টাকা। অথচ প্রধান শিক্ষকদের মতো দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদাপ্রাপ্ত পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই), নার্স, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ দশম গ্রেডে ৮০০০/- টাকার স্কেল পেয়েছেন। উন্নীত বেতন স্কেলে বৈষম্য করায় এবং উন্নীত পদমর্যাদা দীর্ঘ দেড় বছরেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা চরম হতাশ।

ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আমরা মনে করি এ ধরণের বৈষম্য থাকলে মেধাবী ও উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিগণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় আগ্রহী হবেন না। আমরা অনতিবিলম্বে পদমর্যদা ও পদমর্যাদা অনুযায়ী বেতন স্কেল বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জরুরী হস্তক্ষেপ ও সুদৃষ্টি কামনা করছি। অন্যথায়, আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করব।

দাবি

বেতন স্কেলের বৈষম্য দূর করে প্রধান শিক্ষক পদে প্রথম নিয়োগের সময় (ঊহঃৎু ষবাবষ) জাতীয় বেতন স্কেল, ২০০৯ এর দশম গ্রেডে ৮০০০-১৬,৫৪০/- টাকার স্কেলসহ দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে প্রধান শিক্ষকদের নামীয় (ইু হধসব) গেজেট প্রকাশ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়ন করা।

১ম/২য়/৩য় টাইম-স্কেলপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকগণের করেসপন্ডিং স্কেলে বেতন নির্ধারণের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনা জারী করা।

প্রধান শিক্ষক পদে নতুন নিয়োগ ও পদোন্নতি পিএসসি’র আওতাভুক্ত রাখা।

প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়ন করে প্রধান শিক্ষক থেকে উপরের পদসমূহে শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির বিধান চালু করা।

প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কিত বিভাগীয় নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকদের সাংগঠনিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

ঢাকা জার্নাল, আগস্ট ৪, ২০১৫

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.