বিষণ্ণ ব্যক্তিকে যে পাঁচটি কথা বলা যাবে না
মনে যখন বিষণ্ণতা ভর করে তখন কিছুই ভালো লাগে না। আশপাশ থেকে কেউ পরামর্শ, উৎসাহ আর ভালোকথা বললেও বিরক্ত লাগে কখনো কখনো।
যদিও এ ব্যাপারে সহানুভূতিশীল ব্যক্তি বা সহমর্মী বন্ধুটিকে দোষ দেওয়া চলে না। আবার, নিজেকেই বা কতটা দোষারোপ করা যায়—বিরক্ত তো লাগেই, সত্যি। আসলে এ লড়াইটা বেশিরভাগ সময় একারই লড়াই হয়ে দাঁড়ায়। আশপাশের মানুষ হয়ত এটুকুই বোঝেন যে, আপনি দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। এর গভীরতার অঙ্কটা কেবল আপনিই জানেন।
বিষণ্ণ ব্যক্তিকে সচরাচর কিছু সহানুভূতিমূলক কথা, দু’একটা প্রশ্ন বা উপদেশ সবাই দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ঠিক একই কথা, একই উপদেশ একটু ঘুরিয়ে বললে তা অনেক বেশি ফলদায়ক হয়। হয় সত্যিকার অর্থেই বিষণ্ণতা কাটিয়ে তোলার মতো কার্যকর কিছুও।
‘আমি কিভাবে সাহায্য করতে পারি?’
মানসিক অবসাদগ্রস্ত কোনো ব্যক্তিকে যখন কেউ এই প্রশ্ন করে, স্বাভাবিকভাবেই তার মনে হতে পারে—যদি আমিই বলে দিই, আমাকে কিভাবে সাহায্য করা যেতে পারে, তবে আর তোমার সাহায্যের কী প্রয়োজন! আমি তো নিজেই সমাধান করতে পারি।
বরং বলুন, তোমাকে আমরা ভালোবাসি। কারণ কোনো ব্যক্তি যখন হতাশায় ভোগেন, তখন কোনো কোনো সময় সাহায্যের প্রয়োজন হয় না। তিনি শুধু জানতে চান, তিনি একা নন। কাছের মানুষেরা তার পাশে রয়েছে।
‘মানুষের সঙ্গে কথা বলো, সবার সঙ্গে মিশে যাও’
সাধারণ ধারণা থেকেই আমরা এই কথা বলি। ভাবি, একা থাকার কারণে বিষণ্ণতা বাড়ে। অনেকক্ষেত্রে সেটাই হয়। তবে বাস্তব ভিত্তি হচ্ছে, যখন কেউ মানসিকভাবে স্থির থাকে না, তখন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতেই অনেকসময় বাইরের জগতে মিশে যেতে মন সায় দেয় না। তাই বিষণ্ণ ব্যক্তির পক্ষে বাইরের নির্মল হাওয়া ও স্বচ্ছ রোদ গায়ে মাখানো সময়সাপেক্ষ।
তাকে বোঝাতে পারেন, আমি তোমাকে নিয়ে ভাবছি। তুমি স্থির হও। যতক্ষণ না ভালোবোধ করো, নিজের মতো থাকো। এভাবে বললে অবসাদগ্রস্ত ব্যক্তির বিশ্বাস হবে আপনি সত্যিই তাকে ভালোবাসেন এবং তার প্রতি মনোযোগী। এ ব্যাপারটিই তাকে ধীরে ধীরে বদলে দেবে।
‘সব ঘটনারই কারণ থাকে’
ঘটনা কারণবশতই ঘটে। কিন্তু সেই কারণগুলো সবসময় সামনে আসে না। যে অদৃশ্য কারণগুলোর জন্য কোনো বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটে, তা ব্যক্তির পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন। তাই ওই পরিস্থিতিতে যদি দুর্ঘটনা কবলিত ব্যক্তিকে বলা হয়, সব ঘটনারই কোনো না কোনো কারণ রয়েছে আর এটাও ভালোর জন্যই হয়েছে—তাহলে হুট করে সে আপনার সহানুভূতিশীল বাণীর অর্থ বুঝতে পারবে না।
বলুন, ঘটনা যাই ঘটুক, তুমি তো তোমার জায়গায় সঠিক ও সৎ ছিলে। ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে।
‘তুমি অনেক শক্ত, অসাধারণ, সুন্দর’
কথাটি নির্দ্বিধায় অসাধারণ। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, কোনো ব্যক্তি যদি বুঝতে পারেন, কাছের মানুষগুলো তার কষ্ট সম্পর্কে সজাগ। যদি জানেন, সবাই তার নিজস্ব লড়াইটার ব্যাপারে অবগত; তাহলে সেই জানাই বিষণ্ণতা নিরাময়ে কাজ করে।
তুমিই জিতেছো!
সান্ত্বনা দিতে আমরা প্রায়শই বলি—তুমি পেরেছো। জিতেছো তুমিই। কিন্তু এর চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর হচ্ছে এভাবে বলা—আমি সে দিনটির অপেক্ষায় আছি, যেদিন তুমি জিতবে।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
নভেম্বর ৯, ২০১৫