Leadসব সংবাদ

বাংলাদেশের সঙ্গে আবার বিমান যোগাযোগ চালুর প্রস্তাব ভারতের

করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাওয়া বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। একইসঙ্গে ভারতের এয়ার বাবলে যুক্ত হতেও প্রস্তাব করেছে দেশটি।

বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর সঙ্গে তার দফতরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের বিদায়ী হাইকমিশনার শ্রীমতি রীভা গাঙ্গুলি দাস সাক্ষাৎকালে এ প্রস্তাব দেন।

জানা গেছে, করোনার কারণে আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল শুরু করতে পাকিস্তান বাদে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে এয়ার বাবল করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে ভারত। বাণিজ্যিক বিমান চালু করার উদ্দেশ্যে আন্তঃরাষ্ট্রীয় এয়ার বাবল তৈরি করতে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে এয়ার বাবল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি।

সাক্ষাৎকালে ভারতীয় হাইকমিশনার বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কোভিড-১৯ এর কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালু করার প্রস্তাব দেন এবং ভারতের এয়ার বাবলে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি উপস্থাপন করেন। এ সময়ে বাংলাদেশের এভিয়েশন খাতের উন্নয়নে কাজ করার ব্যাপারে ভারতের আগ্রহের কথাও তিনি প্রতিমন্ত্রীকে অবহিত করেন। জবাবে প্রতিমন্ত্রী বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালু করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে একমত পোষণ করেন। মাহবুব আলী বলেন, ‘পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এসময় বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে পর্যটন ও এভিয়েশন খাতের উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক বৃদ্ধির ব্যাপারে আলোচনা হয়। সাক্ষাৎকালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় জনগণের অবদানের কথা বাংলাদেশ সবসময়ই কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দুই বন্ধু রাষ্ট্রের জনগণের মধ্যে আরও সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছে।’

মাহবুব আলী বলেন, ‘কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। প্রতিবেশী বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোর জনগণের পারস্পরিক ভ্রমণের মাধ্যমে এই অঞ্চলের পর্যটন শিল্প কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে। পর্যটন ও এভিয়েশন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা উভয়ের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।’

এ সময় রীভা গাঙ্গুলী বাংলাদেশে অবস্থানকালে তার সুন্দরবন ভ্রমণের চমৎকার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ‘বাংলাদেশ পর্যটনের অপার সম্ভাবনার একটি দেশ। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে পর্যটন সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনাও প্রচুর। ভারতীয় অনুদানে রবীন্দ্র স্মৃতিবিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়ির অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে। তা সমাপ্তির পর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশাল সংখ্যক মানুষ তা দেখতে বাংলাদেশ ভ্রমণ করবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিলেট-লন্ডন সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত শুরু হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে যুক্তরাজ্যে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর অধিবাসীদের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার অনেক বেশি সুবিধাজনক হবে।’

জবাবে ভারতীয় হাইকমিশনার একমত পোষণ করেন। বাংলাদেশে অবস্থানকালে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য বিদায়ী হাইকমিশনারকে প্রতিমন্ত্রী ধন্যবাদ জানান। এ সময় শ্রীমতি রীভা দাস গাঙ্গুলীকে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের সচিব (পূর্ব) হিসেবে পদায়িত হওয়ায় অভিনন্দন ও শুভকামনা জানান তিনি।