Lead

‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ বিতরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৩১ জুলাই) ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ বিতরণ করবেন। দ্বিতীয়বারের মতো এ বছর ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ পাচ্ছেন প্রশাসনের ২৮ জন কর্মকর্তা ও দুটি সরকারি দফতর। ২৮ জন কর্মকর্তার মধ্যে ২৩ জন পাবেন দলগত শ্রেণিতে এবং ব্যক্তিগত শ্রেণিতে পদক পাচ্ছেন পাঁচ জন। এ ছাড়া এবার ‘নীতি ও প্রশাসনিক পদ্ধতির সংস্কার’ ক্যাটাগরিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং ‘গবেষণা ও মানবকল্যাণে এর ব্যবহার’ ক্যাটাগরিতে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পদক পাচ্ছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র জানায়, ‘জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস’ উপলক্ষে ৩১ জুলাই রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মনোনীতদের হাতে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ তুলে দেওয়া হবে। ২০১৬ সাল থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা, মননশীলতা ও উদ্ভাবনী প্রয়াসকে উৎসাহিত করতে ‘জনপ্রশাসন পদক’ দেওয়া হতো। গত বছর থেকে ‘জনপ্রশাসন পদক’-এর নাম বদলে নতুন আঙ্গিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানে কর্মকর্তাদের ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ দেওয়া হচ্ছে। প্রতি বছর ২৩ জুন ‘জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস’ উদযাপন করা হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘সবার আগে সুশাসন, জনসেবায় উদ্ভাবন’।/

এরমধ্যেই জাতীয় পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক প্রাপ্তদের তালিকা চূড়ান্ত করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। মনোনীতদের তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ‘সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা’ শ্রেণিতে দলগতভাবে এ পদক পাচ্ছেন লক্ষ্মীপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব) আনোয়ার হোছাইন আকন্দ, লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ কবীর, একই জেলার সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) ও বর্তমানে বিসিএস প্রশাসন অ্যাকাডেমির উপপরিচালক নূর-এ-আলম, সদর উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসেন (বর্তমানে বিএসটিআই’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) ও রায়পুর উপজেলার ইউএনও অনজন দাশ।

খাগড়াছড়ি জেলার সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব) প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস, খাগড়াছড়ির সাবেক এডিসি (বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব) কে এম ইয়াসির আরাফাত, খাগড়াছড়ি জেলার সাবেক সহকারী কমিশনার (বর্তমানে মাগুরার মহম্মদপুরের সহকারী কমিশনার-ভূমি) বাসুদেব কুমার মালো ও খাগড়াছড়ির সাবেক সহকারী কমিশনার (মাগুরা জেলার সহকারী কমিশনার) শেখ নওশাদ হাসান ‘উন্নয়ন প্রশাসন’ ক্যাটাগরিতে এ পদক পাচ্ছেন।

‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন’ শ্রেণিতে মনোনীত হয়েছেন চার জন কর্মকর্তা। এদের মধ্যে রয়েছেন— শরীয়তপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে বরিশালের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার) পারভেজ হাসান, শরীয়তপুরের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সাবেক উপ-পরিচালক (বর্তমানে অধিদফতরের উপপরিচালক) মতলুবর রহমান, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার ইউএনও কামরুল হাসান সোহেল এবং জাজিরা উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা জামাল হোসেন।

‘পরিবেশ উন্নয়ন’ শ্রেণিতে পদক পাচ্ছেন পাঁচ জন। তারা হলেন—হবিগঞ্জের সাবেক ডিসি (বর্তমানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপসচিব) ইশরাত জাহান, হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিন্টু চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী) শাহানেওয়াজ তালুকদার, হবিগঞ্জের সহকারী কমিশনার নাভিদ সারওয়ার ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী দিলীপ কুমার দত্ত।

‘মানবসম্পদ উন্নয়ন’ ক্যাটাগরিতে পদক পাচ্ছেন পাঁচ জন। এদের মধ্যে রয়েছেন—গাইবান্ধার বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) উপপরিচালক আবদুস সবুর, গাইবান্ধা সদর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা তাহাজুল ইসলাম, সুন্দরগঞ্জের উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আবুল কামাল আজাদ, গোবিন্দগঞ্জের উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক ও পলাশবাড়ির উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান।

‘দুর্যোগ ও সংকট মোকাবিলা’ শ্রেণিতে ব্যক্তিগতভাবে পদক পাচ্ছেন গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. খায়রুজ্জামান, ‘সামাজিক উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ শ্রেণিতে সুনামগঞ্জ জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদি উর রহিম জাদিদ, ‘অপরাধ প্রতিরোধ’ শ্রেণিতে র‌্যাব-১১-এর জঙ্গি সেলের সাবেক ইন্টেলিজেন্স অফিসার ও কমান্ডার (বর্তমানে ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার) মির্জা সালাহ উদ্দিন, ‘জনসেবায় উদ্ভাবন’ শ্রেণিতে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার ইউএনও সোহাগ চন্দ্র সাহা এবং ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’ ক্যাটাগরিতে নওগাঁর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হক।

মনোনীতদের পুরস্কার হিসেবে একটি স্বর্ণপদক (২১ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম ওজনের) এবং রাষ্ট্রীয় মনোগ্রাম সংবলিত সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে। ব্যক্তিগত অবদানের জন্য দুই লাখ টাকা, দলগত অবদানের জন্য পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হবে। দলগত অবদানের ক্ষেত্রে দলের সর্বোচ্চ সদস্য সংখ্যা পাঁচ জন। দলের প্রত্যেক সদস্যকে স্বর্ণপদক, সম্মাননাপত্র ও ক্রেস্ট দেওয়া হবে এবং নগদ পুরস্কারের পাঁচ লাখ টাকা সদস্যদের মধ্যে সমভাবে বণ্টন করা হবে। প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে স্বর্ণপদক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে।