Leadসব সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা বাংলাদেশের মানচিত্রের প্রতি অবমাননা

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙা বাংলাদেশের মানচিত্রের প্রতি অবমাননা বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

সোমবার (৭ ডিসেম্বর) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘মুজিব শতবর্ষ ও নিরাপদ খাদ্য দিবস-২০২১’ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের অগ্রগতি বিষয়ক এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। বাংলাদেশের কথা চিন্তা করলে বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করতেই হবে। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল; বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেও যাদের মনোবাসনা পূর্ণ হয়নি; আজ তারাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা করছে। তারা এবং তাদের অনুসারীরাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করেছে।

খাদ্যমন্ত্রী এ সকল স্বাধীনতা বিরোধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বলেন, তাদের এ ধরনের ঘৃণ্য কার্যকলাপ বাংলাদেশের মানচিত্রের প্রতি অবমাননা, বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার উপর চরম আঘাত। তিনি বলেন, জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মৃত বঙ্গবন্ধু আরো বেশি শক্তিশালী। তার রেখে যাওয়া আদর্শ ও দিকনির্দেশনার উপর ভর করেই তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের মাঝে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করতে পেরেছেন।

বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে সভায় মন্ত্রী বলেন, জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ভেজালমুক্ত নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা বিধানে বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মহান জাতীয় সংসদে ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন পাস হয় এবং ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রী জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য সারাদেশে জনসচেতনামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন এর উপর জোর দেন।

অনুষ্ঠানে মুজিব শতবর্ষ ও নিরাপদ খাদ্য দিবস- ২০২১ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ৬৪ টি জেলা, সকল উপজেলা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ভোক্তা, খাদ্য নির্মাতা, নির্বাচিত সকল পর্যায়ের প্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে প্রচার-প্রচারণামুলক কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কভিড-১৯  এর কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রচার-প্রচারণামূলক কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হয়। এ প্রেক্ষাপটে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ২৫ টি উপজেলায় প্রচার প্রচার কার্যক্রম ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রচার প্রচারণা জোরদার করার মাধ্যমে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ইতিমধ্যেই সাভার উপজেলা এবং নরসিংদী জেলায় ক্যারাভান রোড শো অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ২০১৯ সালে ৫৭টি এবং ২০২০ সালে ৩০টিসহ hotel-restaurant সর্বমোট ৮৭টিকে গ্রেড প্রদান করার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অধীনে বাজার মনিটরিং কমিটি কর্তৃক জুলাই ২০২০ থেকে ৩০ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত ৫২ টি বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ৫১টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ৬৮ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড আদায় করা হয়।

এছাড়া বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে উদ্ভাবনী কর্মসূচিতে গ্রেড প্রাপ্ত হোটেল-রেস্তোরাঁ সমূহকে অ্যাপ ভিত্তিক মনিটরিং(নজর) এর আওতায় আনার জন্য হোটেল কস্তুরীর সাথে পাইলটিং কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে সভায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এর চেয়ারম্যান জানান। এই অ্যাপস এর মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ তার কার্যালয় থেকেই এসমস্ত হোটেল-রেস্তোরাঁর কিচেন/ রান্নাঘরের পরিবেশ মনিটরিং করতে পারবে। পর্যায়ক্রমে নজরের সম্প্রসারণ সারাদেশে করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।

উল্লেখ্য জনগণের ভেজাল মুক্ত নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন এবং ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করে বর্তমান সরকার।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম এর সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কাইউম সরকার, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সচিব আব্দুল নাসের খান সহ কর্তৃপক্ষের অন্যান্য সদস্যগণ, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।