Lead

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নামের আগে সেনা পদবি নয়

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের নামের আগে সেনা পদবি ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞার দাবি তুলেছেন সাবেক আইনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল মতিন খসরু।httpss://www.facebook.com/v6.0/plugins/quote.php?app_id=436163869915872&channel=httpss%3A%2F%2Fstaticxx.facebook.com%2Fx%2Fconnect%2Fxd_arbiter%2F%3Fversion%3D46%23cb%3Df19b3fe91523c88%26domain%3Dwww.banglatribune.com%26origin%3Dhttpss%253A%252F%252Fwww.banglatribune.com%252Ff17d3dba78b4fb%26relation%3Dparent.parent&container_width=0&href=httpss%3A%2F%2Fwww.banglatribune.com%2Fnational%2Fnews%2F652225%2F%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%2599%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%2597%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%258D%25E0%25A6%25A7%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25B0-%25E0%25A6%2596%25E0%25A7%2581%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BF%25E0%25A6%25A6%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0-%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AE%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25B0-%25E0%25A6%2586%25E0%25A6%2597%25E0%25A7%2587-%25E0%25A6%25B8%25E0%25A7%2587%25E0%25A6%25A8%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AA%25E0%25A6%25A6%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF-%25E0%25A6%25A8%25E0%25A7%259F-%25E0%25A6%25A6%25E0%25A6%25BE%25E0%25A6%25AC%25E0%25A6%25BF&locale=en_US&sdk=joey

বুধবার (১১ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে আনা সাধারণ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় তিনি এ দাবির কথা জানান। এর আগে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা জানাতে ১৪৭ বিধিতে সাধারণ প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধের প্রসঙ্গ টেনে আব্দুল মতিন খসরু বলেন, ‘কত নিকৃষ্ট মানুষ। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলো। সেই খুনির বিচার করা যাবে না, ইনডেমনিটি দিলো। কোথাও এই আইন আছে? জিয়াউর রহমান খুনিদের রাষ্ট্রদূত বানিয়েছে। খালেদা জিয়া জানেন না রশীদ খুনি? রাসেলের খুনিকে তিনি চেনেন না? খুনিকে বিরোধী দলের চেয়ারে বসিয়ে দিলেন। খালেদা জিয়া অপরাধী। তারা ডকট্রিন অব ইমপিউনিটি চালু করেছিল।’

তিনি বলেন, ‘জিয়া এবং খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে রেগুলার যেতেন। বঙ্গবন্ধু একটু তাকালে তারা খুশি হয়ে যেতেন। বঙ্গবন্ধুর খুনিরা বুক ফুলিয়ে হাঁটতো। আর জীবনে দেশে আসতে পারবে না। এদের নামের সঙ্গে কর্নেল, ব্রিগেডিয়ার থাকা উচিত না। আমাদের সেনাবাহিনী আমাদের গৌরব। তাদের নামের আগে ওসব (পদবি) থাকা উচিত না।’

একইসঙ্গে তিনি কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্যে থাকা ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের আইনের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানাদিক তুলে ধরে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। অজপাড়াগাঁয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটবেলা থেকেই সত্যের কথা বলতেন। তিনি যদি ৭০-এর নির্বাচনে না যেতেন, তাহলে ইতিহাস এরকম হতো না। তিনি ম্যানডেট পেলেন। এই একটা সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে। বিচক্ষণ দৃঢ় নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধু নাই, তার আদর্শ-চেতনা সেটা তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা করছেন। তার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে কার তুলনা হয়, খালেদা জিয়ার? বিএনপিকে জিজ্ঞাসা করলেও বলে না। বাংলাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ শেখ হাসিনার নেতৃত্ব। এটা তোষামোদি নয়, বাস্তবতা। বঙ্গবন্ধুর ক্ষমতা ছিল ঐশ্বরিক। আজ বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে তিনি শেখ হাসিনাকে বলতেন, মা তুমি প্রধানমন্ত্রী হও। এটা তোষামদি নয়, বাস্তবতা।’

বঙ্গবন্ধু বেসরকারি খাতের পক্ষে ছিলেন

আলোচনায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য সালমান ফজলুর রহমান  বলেন, ‘অনেকে মনে করে বঙ্গবন্ধু বেসরকারি খাতের পক্ষে ছিলেন না। এটি সত্য নয়। স্বাধীনতার পর ফরেন এক্সচেঞ্জ ছিল না। ফলে বাণিজ্য করতে হতো বার্টার সিস্টেমে। কিছু পণ্য রফতানির বিপরীতে আমদানি হতো। যখন বেক্সিমকো শুরু করলাম আমাদের প্রস্তাবে রাজি হলেন। তবে শর্ত দিলেন ৬০ শতাংশ প্রচলিত পণ্য রফতানি করতে পারবো। বাকি ৪০ শতাংশ অপ্রচলিত পণ্য। পাট, চামড়া আর চিংড়ি এগুলো ছিল অপ্রচলিত পণ্য। তখন চা-কে অপ্রচলিত পণ্য হিসেবে রফতানি পণ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করলেন বঙ্গবন্ধু। ওষুধ, সার, কীটনাশক এনেছি। তখন থেকেই রফতানি বহুমুখীকরণের গুরুত্ব বঙ্গবন্ধু বুঝেছিলেন। সেটা বাস্তবায়নের জন্য বেসরকারি খাতকেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন।’

সালমান এফ রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বঙ্গবন্ধুর মতো বেসরকারি খাতের ওপর বিশ্বাস রাখেন। বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন, তবে এতদিনে সোনার বাংলা গড়ে তুলতেন। আমাদের সৌভাগ্য, আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া স্বপ্ন পূরণে হাল ধরেছেন তিনি—এই দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করবেন।’

আলোচনায় ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, ‘অনেক বেদনার সঙ্গে বলতে হয়, মহান নেতা এ দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য জীবনের বেশিরভাগ সময় কারাগারে কাটিয়েছেন, তিনি পরাধীন জাতিকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ উপহার দিয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত ধ্বংসস্তূপের ওপর দণ্ডায়মান একটি দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করতে নিরলস কাজ করেছেন। সেই অবিসংবাদিত নেতাকে এ দেশের কিছু বিশ্বাসঘাতক বাঁচতে দেয়নি।’

ফজলে রাব্বী মিয়া বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তোলেন।

আওয়ামী লীগের সিনিয়র সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘অনেকে বলে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রভাষার জন্য কিছু করে নাই। তাদের বলি ইতিহাস পড়ো। ২১ ফেব্রুয়ারি যখন রফিক-সালামদের হত্যা করা হয়, বঙ্গবন্ধু তখন ফরিদপুর জেলে অনশন করছেন। বঙ্গবন্ধুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাকে অনশন ভাঙার জন্য বলা হয়। তিনি করেননি। পরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।’

পঁচাত্তর পরবর্তী প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করলো। বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ করতো না। ইতিহাসকে চাপা দেওয়া যায় না। জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে মৃত বঙ্গবন্ধু অনেক বেশি শক্তিশালী। যতদিন বাংলাদেশ ততদিন বঙ্গবন্ধু। তার শারীরিক মৃত্যু হতে পারে, কিন্তু আদর্শের মৃত্যু হবে না।’

অন্যদের মধ্যে আলোচনায় আরও অংশ নেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এ মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের মৃণাল কান্তি দাস, মেহের আফরোজ চুমকি, আবদুস সোবহান মিয়া, নজরুল ইসলাম বাবু, জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রমুখ।