Leadশিক্ষা-সংস্কৃতি

প্রাথমিকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাবে সম্মতি

দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের পাঁচ হাজার ১৬৬ জন শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সংগীতের দুই হাজার ৫৮৩ জন এবং শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক দুই হাজার ৫৮৩ জন।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহাম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে। এরপর অর্থ বিভাগের সম্মতি নিয়ে সচিব কমিটিতে এই প্রস্তাব পাঠানো হবে। তারপর সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে পাঁচ হাজার ১৬৬ জন  শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। ’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাবনা তৈরি করে। প্রাথমিক শিক্ষার মান বাড়াতে প্রশাসনিক সংস্কারে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। নতুন করে এক লাখ ৬৯ হাজার ১২৪টি শিক্ষককের পদ সৃষ্টির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় মন্ত্রণলয়। এসব পদের ছিলো মধ্যে দুই হাজার ৫৮৩টি সংগীত, দুই হাজার ৫৮৩টি শারীরিক শিক্ষা, সাধারণ শিক্ষকের পদ ৯৮ হাজার ৩৩৮টি সাধারণ এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ ৬৫ হাজার ৬২০টি।

এই প্রস্তাবের মধ্যে সম্প্রতি সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের পদ অনুমোদন প্রস্তাবের সম্মতি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন-কর্মসূচির (পিডিপি-৪) এর আওতায় এসব শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়া হবে। এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয় এসব শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে। বেতন-ভাতার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এখন আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি প্রয়োজন হবে। এরপর প্রস্তাবটি সচিব কমিটিতে যাবে। সচিব কমিটি অনুমোদন দিলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রাথমিক শিখ্ষা অধিদফতর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করে শিক্ষক নিয়োগ দেবে।

করে নাগাদ শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া সম্ভব হতে পারে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহাম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, তবে খুব বেশি সময় লাগার কথা নয়। অর্থ বিভাগের সম্মতির আনুষ্ঠানিকতা এবং সচিব কমিটির সুপারিশের পর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া সম্ভব হবে। ’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মানসম্মত শিক্ষা অর্জনে প্রায় দুই বছর বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার পর প্রশাসনিক সমস্যাসহ বিভিন্ন সমস্যা ধরা পড়ে প্রাথমিক শিক্ষায়। পরিস্থিতি উত্তোরণে করোনার ছুটির মধ্যেই প্রশাসনিক সংস্কারের উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপের পাশাপাশি নতুন পদ সৃষ্টি, সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ, সংগীত ও শারীরিক শিক্ষকের পদসৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়। পর্যায়ক্রমে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে বর্তমান সরকারের।

এদিকে, শিক্ষক সংকট মেটাতে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত ২২ এপ্রিল প্রথম ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনটি ধাপে পরীক্ষা নিয়ে চলতি বছরই শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।

প্রসঙ্গত, দেশে মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৬৫ হাজার ৬৬টি। এর মধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একাযোগে জাতীয় করার করা প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৩৭ হাজার ৬৭২টি।  বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় করা হয়েছে ১ হাজার ২০৭টি।  আর বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দফায় নতুন করে জাতীয়করণ করেছেন ২৬ হাজার ১৫৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয় রয়েছে ৬১টি। এসব বিদ্যালয়ে চার লাখ ২৮ হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মরত আছেন। সূত্র বাংলা ট্রিবিউন