Lead

প্রতিবেলায় ৩০ হাজার শ্রমিককে খাবার দেয় প্রাণ

pran-bg20130930072532ঢাকা জার্নাল: নরসিংদী জেলার পলাশ এলাকার বাসিন্দা আফরোজা বেগম। দু মেয়ে আর এক ছেলে মিলে পাঁচজনের সংসার। স্বামী মোক্তার হোসেন ছো্ট্ট একটা মুদি দোকানে কাজ করেন। কিন্তু তাতে সংসার ঠিকঠাক চলে না।
অভাবের তাগিদে আফরোজা একদিন সিদ্ধান্ত নিলেন আর দশজন নারীর মতো সেও কাজ করবে। কিন্তু কাজ পাবে কোথায়? পাশের বাড়ির চম্পা কাজ করে পলাশে অবস্থিত প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে।
এখানে প্রায় নয় হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান। আফরোজাও কাজ পেল প্রাণ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে। কাজের সুবাদে ধীরে ধীরে তার অভাব কাটতে লাগল। এখন ছেলেমেয়েকে নিয়ে খেয়েপড়ে দিব্ব্যি সংসার চালাচ্ছেন তিনি।
কাজে যোগ দেওয়ার পর আফরোজা প্রতিদিন সকালে পরিবারের সবার জন্য রান্না করতো। আবার দুপুরে খাওয়ার জন্য নিজে টিফিন তৈরি করে দিত। কিন্তু গরমকালে প্রায় দিনই সেই খাবার নষ্ট হয়ে যেত। ফলে কষ্ট করে সেই খাবার তাকে খেত হতো। আবার অনেক সময় না খেয়ে, রাতের খাবারের জন্য অপেক্ষা করতে হতো।
একদিন আফরোজা দেখতে পেল প্রাণ-আরএফএল কর্তৃপক্ষ দুপুরের খাবার সরবরাহ করেছে। এখন আফরোজার আর দুপুর বা রাতের খাবার নিয়ে চিন্তা করতে হয় না। শিফটিং ডিউটির সুবাদে যে সময়ই তার কাজ পড়ুক খাবার সরবরাহ করা হয় ফ্যাক্টরি থেকে।
এ সম্পর্কে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বাংলানিউজকে বলেন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপে প্রায় ৪০ হাজার লোক কাজ করেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রায় ১৩টি কারখানা আছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন কারখানায় কাজ করে প্রায় ৩০ হাজার কর্মী। কাজ করতে এসে তারা যাতে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে পারে। সেজন্য আমরা সব ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের দুপুর এবং রাতের খাবার সরবরাহ করে থাকি। আর খাবারগুলো রান্না করা হয় ফ্যাক্টরির ভেতরেই।
লক্ষ্য করা যায় শ্রমিকেরা সাধারণত যে খাবার বাসা থেকে নিয়ে আসত সেগুলো তেমন পুষ্টিকর নয়। আবার অনেক সময় দেখা যেত তাদের বাড়ি থেকে নিয়ে আসা খাবার নষ্ট হয়ে গেলে তারা আর খাবার গ্রহণই করে না।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে, অনেক সময় খরচ বাঁচাতে তারা দুপুরে শুধু এক টুকরা পাউরুটি খেতো ফ্যাক্টরির বাইরের বিভিন্ন দোকানে। সেখানকার খাবার স্বাস্থ্যসম্মত না হওয়ায় প্রায়শই কর্মীরা অসুস্থ হয়ে পড়ত। এসব দিক বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের খাবার দেওয়ার সুব্যবস্থা করেছে। আমরা শ্রমিকদের দুপুরের বা রাতের খাবার সরবরাহ করতে ২ টাকা করে নিয়ে থাকি। এটা শুধু হিসাব রাখার জন্য।
আমার সাধারণত সপ্তাহের বিভিন্ন দিন বিভিন্ন খাবার দিয়ে থাকি। মাছ, মাংস, ডিম, সবজি, ডাল, ভর্তা সব কিছুই থাকে খাবার মেন্যুতে। একদিনে সাধারণত তিনটা আইটেম দিয়ে খাবার মেন্যু সাজানো হয়।
মাছ বা মাংস কিংবা ডিমের মধ্যে যেকোনো একটা থাকে। শুধু দুপুরের বা রাতের খাবার নয়, কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন সময় বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করা হয়। খাবারের মান যাচাইয়ের জন্য আমাদের পুষ্টিবিদ আছেন। তাদেরই পরামর্শে প্রতিদিনের খাবার মেন্যু নির্ধারণ করা হয়।
বাংলাদেশ সময় ১৯০৯ ঘন্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৩

ঢাকা জার্নাল, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৩।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.