Leadসংবাদ শিরোনামসব সংবাদ

পাঠ্যসূচিতে শিক্ষার্থীরা পড়বেন বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’

banghobandho_ঢাকা জার্নাল: বেশ পুরনো কিছু খাতা, সেগুলো ভরা জীর্ণশীর্ণ পাতায়। আর তাতে প্রায় মুছে যাবার অপেক্ষায় থাকা কিছু লেখা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা এরকম চারটি খাতা আকস্মিকভাবে ২০০৪ সালে তাঁর কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে এসেছিল। সেই দুর্লভ লেখাগুলো বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী নাম নিয়ে বই আকারে প্রকাশিত হয় ২০১২ সালে। এ ইতিহাস সবার জানা।

তবে নতুন ইতিহাস হলো- এই প্রথমবারের মতো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করা হলো বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ্য বইয়ের অংশ হিসেবে পড়বেন ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’। তবে বাংলায় নয়, আত্মজীবনীর ইংরেজি অনুবাদ ‘দি আনফিনিশড মেমোরিজ’ই পড়বেন তারা।

ইংরেজি বিভাগে চলতি বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে যে সিলেবাসটি দেওয়া হয়েছে তাতে উল্লেখ রয়েছে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পাঠ্যবই হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার বিষয়টি। বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পড়ানো হবে বইটি।

তবে এখনই তা পড়তে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে বিভাগে যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন তারা তৃতীয় বর্ষে উঠলেই পড়বেন ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’। ওই বর্ষের ‘নন ফিকশনাল প্রোস ইন ইংলিশ’ (৩০২ নম্বর) নামক ১০০ নম্বরের কোর্সে পাঠ্য হিসেবে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে পড়ার সুযোগ পাবেন তারা। এই কোর্সে এতদিন মহাত্মা গান্ধী, বার্ট্রান্ড রাসেল, মার্টিন লুথার কিং, নীরদচন্দ্র চৌধুরী আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প পড়তো শিক্ষার্থীরা। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হলো বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী।

ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমদ জানান, ‘আমার শিক্ষার্থীরা বিদেশি সাহিত্যিক শেলি সম্পর্কে জানে, শেক্সপিয়র সম্পর্কে জানে আবার মার্টিন লুথার কিং পড়ে, বার্ট্রান্ড রাসেল পড়ে কিন্তু আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে ভালো করে জানার আর পড়ার সুযোগ পাবে না তা তো হতে পারে না।  তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম এবার থেকে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পাঠ্য বই হিসেবে শিক্ষার্থীদের পড়াবো। পরে বিষয়টি একাডেমিক কমিটির বৈঠকে তুললে আমার সহকর্মীরা সবাই তাতে সায় দেয়। এরপর তৃতীয় বর্ষের সিলেবাস সংযোজন করে বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে এখন যারা তৃতীয় বর্ষে আছে তারা পড়তে পারবে না। কেননা তারা পুরনো সিলেবাসেই অধ্যায়ন করছে।  ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে যারা ভর্তি হয়েছেন তারা তৃতীয় বর্ষে ওঠার পর ‘দ্যা আনফিনিশড মেমোরিজ- শেখ মুজিবুর রহমান’ নামে বইটি তাদের পড়ানো হবে।  ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য সিলেবাসটি একই থাকবে।’

‘আমার জানামতে, বাংলাদেশের অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীকে পাঠ্য হিসেবে পড়ানো হয় না।’ যোগ করেন ইংরেজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমদ।

কামাল উদ্দিন আহমদের বক্তব্যের সত্যতা যাচাইয়ে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত ঘেঁটে ও গুগলে সার্চ করে জানা যায়, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যসূচিতে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীর কিছু অংশ অন্তর্ভূক্ত আছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী অন্তর্ভূক্ত হওয়া সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিয়ে উচ্ছ্বসিত ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরাও। বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী ইমাদ আহমেদ সাহিল বলেন, ‘যিনি না হলে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হতো না, তার আত্মজীবনী পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভূক্ত করার সিদ্ধান্ত দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মাঠে ঘাটে বক্তৃতা হয়। অথচ তাঁর সম্পর্কে কতটুকু জানি? আমাদের বিশ্বাস পাঠ্যবইয়ে অর্ন্তভূক্ত করার ফলে শিক্ষার্থীরা পুরোপুরিভাবে বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ, দেশের প্রতি ভালোবাসা সম্পর্কে জানতে পারবেন।’

ঢাকা জার্নাল, মার্চ০৯, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.