পাকিস্তান-তুরস্কের সঙ্গে কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের দাবি
ঢাকা জার্নাল : পাকিস্তান ও তুরস্কের সঙ্গে বাংলাদেশের কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা। পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধের বিচারে এ দুই দেশের আচরণে বিক্ষুদ্ধ সাংবাদিকরা পাকিস্তানের জাতীয় পতাকাও পুড়িয়েছেন দিয়েছেন।
এছাড়া সাংবাদিক নেতারা বাংলাদেশের মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামীদের রায় কার্যকরে পাকিস্তান ও তুরস্কের উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে জাতিসংঘে শিমলা চুক্তির বিষয়টি উত্থাপনের আহ্বান জানান।
বুধবার (১৮ মে) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাববের সামনে স্বাধীনতা সাংবাদিক পরিষদের (স্বাসাপ) ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশের এসব দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ শফিকুর রহমান। স্বাসাপের আহ্বায়ক বরুণ ভৌমিক নয়নের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ আরো বক্তব্য রাখেন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সাধারণ সম্পাদক কুদ্দুস আফ্রাদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন সাহা, সাংবাদিক নেতা মাহমুদুর রহমান খোকন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের জনকল্যাণ সম্পাদক উম্মুল ওয়ারা সুইটি, সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক শাহানা শিউলী এবং স্বাসাপের সদস্য সচিব মোহাম্মদ জসিম।
সমাবেশে সাংবাদিক নেতারা বলেন, এ দেশ দুইটি বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে কূটনৈতিক রীতি-নীতি লঙ্ঘন করে অনেক দিন ধরেই নাক গলাচ্ছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গণে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী চক্রকে মদদ দিয়ে চলেছে। কুখ্যাত নিজামীকে ‘ইসলামিক’ নেতার তকমা পরিয়ে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, তারা আইন আদালত মানে না, বিচার মানে না। তাই এ দেশে রাজনীতি করার কোনও অধিকারও তাদের থাকতে পারে না।
সমাবেশে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান বাহিনী যে অন্যয় করেছে তা ক্ষমাহীন। বঙ্গবন্ধুর জীবদ্দশায় তুরস্ক স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি দেয়নি পাকিস্তান ও তুরস্ক। আও তাদের আচরণ শিষ্টাচার বহির্ভূত।
আল জাজিজরা, বিবিসিসহ কয়েকটি বিদেশি গণমাধ্যমের সমালোচনা করে শফিকুর রহমান বলেন, মানবতা বিরোধী অপরাধী মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহীদিসহ দণ্ডিতরা কোনো ইসলামিক নেতা নন। এমনকি তারা মুসলমানও নন। অথচ পাকিস্তান ও তুরস্ক তাদের ইসলামিক নেতা হিসেবে উপস্থাপন করছে।
উদ্ধত্যপূর্ণ এ আচরণ এবং কর্মকাণ্ডের কারণে পাকিস্তান ও তুরস্কের সঙ্গে আমাদের আর কুটনৈতিক সম্পর্ক রাখার প্রয়োজন নেই।
সরকারের কাছে বাংলাদেশের কুটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জোর দাবি জানান শফিকুর রহমান।
সাংবাদিক নেতা কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, পাকিস্তান এখনও বাংলাদেশকে তাদের কলোনী মনে করে। অথচ তারা এখনি একটি ভঙ্গুর দেশ। আর আমরা দিনের পর দিন উন্নয়ন করে যাচ্ছি।
কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, স্বাধীনতার পর পরই যারা বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি। সেইসব দেশ এখন ষড়যন্ত্র করছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে।
যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে পাকিস্তান ও তুরস্ক যে উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে তা ক্ষমাহীন। সাংবাদিকরা চান এই দুই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কুটনৈতিক না থাকুক। আজ তার আর প্রয়োজনও নেই।
সাংবাদিক নেতা আব্দুল জলিল ভূঁইয়া বলেন, সরকারের কাছে আমাদের দাবি শিমলা চুক্তির বিষয়টি জাতিসংঘে আলোচনার জন্য উত্থাপন করা। শিমলা চুক্তি অনুযায়ী ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে বিচার করার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি পাকিস্তান। উল্টো এখন পাকিস্তান ও তুরস্ক ষড়যন্ত্র করছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এটা প্রতিহত করতে হবে।
ঢাকা জার্নাল, মে ১৮, ২০১৬।